কুরআন মাজিদের মত একটি সুরা নিয়ে আস

Challenge2

কুরআন মাজিদের মত একটি সুরা নিয়ে আস

وَمَا كَانَ هَذَا الْقُرْآَنُ أَنْ يُفْتَرَى مِنْ دُونِ اللَّهِ وَلَكِنْ تَصْدِيقَ الَّذِي بَيْنَ يَدَيْهِ وَتَفْصِيلَ الْكِتَابِ لَا رَيْبَ فِيهِ مِنْ رَبِّ الْعَالَمِينَ (37) أَمْ يَقُولُونَ افْتَرَاهُ قُلْ فَأْتُوا بِسُورَةٍ مِثْلِهِ وَادْعُوا مَنِ اسْتَطَعْتُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ (38)

এ কুরআন তো এমন নয় যে, আল্লাহ ছাড়া কেউ তা রচনা করতে পারবে; বরং এটি, যা তার সামনে রয়েছে, তার সত্যায়ন এবং কিতাবের বিস্তারিত ব্যাখ্যা, যাতে কোনো সন্দেহ নাই, যা সৃষ্টিকুলের রবের পক্ষ থেকে। নাকি তারা বলে, ‘সে তা বানিয়েছে?’ বল, তবে তোমরা তার মত একটি সূরা (বানিয়ে) নিয়ে আস এবং আল্লাহ ছাড়া যাকে পারো (তোমাদের সাহায্যের জন্য) ডাক, যদি তোমরা (তোমাদের সন্দেহের ক্ষেত্রে) সত্য হয়ে

থাক। (ইউনুস, ১০ : ৩৭-৩৮)

আয়াতদ্বয় সমগ্র মানব সমাজের জন্য একটি অত্যন্ত বলিষ্ঠ এবং প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ। আয়াতগুলি পরিষ্কার ভাষায় বলছে, কুরআন মাজিদ এমন একটি গ্রন্থ যা আল্লাহ তাআলা ব্যতীত অন্য কেউ রচনা করতে পারে না। অতঃপর বলে, যদি কেউ ধারণা করে এটি একজন মানুষ কর্তৃক রচিত গ্রন্থ সে যেন নিদেনপক্ষে কুরআন মাজিদের মত একটি সুরা তৈরি করে নিয়ে আসে।

বাস্তবতা হল, এ যাবৎ কেউ একটি সুরাও তৈরি করতে সক্ষম হয় নি, যা কুরআন মাজিদের কোনো সুরার অনুরূপ হতে পারে। আমরা এখানে একটি ঘটনার কথা স্মরণ করি, যা তৎকালীন আরব সমাজ কুরআন মাজিদের এই চ্যালেঞ্জকে কিভাবে গ্রহণ করেছিল, তার চিত্র তুলে ধরবে।

কুরআন মাজিদের সর্বকনিষ্ঠ সুরা হল আল-কাউসার (১০৮)। এতে কেবল ছোট ছোট তিনটি আয়াত রয়েছে, যা কেবল একটি সাধারণ সারিতে লেখা যেতে পারে। ঐতিহাসিকগণ বলেন, যখন মুহাম্মদ (সাঃ) এর ঘোর শত্রু আবু জেহেল এই সুরা শুনতে পেল সে এতই অভিভূত হয়ে পড়েছিল যে, সে বিস্মিত কণ্ঠে বলে উঠল, ‘সকল মহিমা প্রভুর জন্যে!’ উল্লেখ্য যে, আরবরা ছিল খুবই কাব্যানুরাগী। আর কবিতা প্রতিযোগিতা ছিল তাদের সামাজিক অনুষ্ঠান-সমাবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঐতিহাসিকগণ লিখেন, বহুদিন যাবৎ সাতটি আরবি কবিতা তৎকালীন আরবি সাহিত্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বলে স্বীকৃত ছিল। এই কবিতাগুলি পৃথক পৃথকভাবে কাগজের টুকরায় লিখে কাবা শরিফের প্রধান দরজায় ঝুলানো ছিল।

যখন সুরা কাউসার অবতীর্ণ হয় তখন এসব কবিতার লেখকদের মধ্যে একজন ব্যতীত সবাই মৃত্যুবরণ করে। আবু জেহেল একটি কাগজের টুকরায় সুরা কাউসার লিপিবদ্ধ করে এবং তা একমাত্র জীবিত কবির কাছে নিয়ে যায়। যখন কবি সুরা কাউসার পড়ল, সে বিস্ময়ে ফেটে পড়ল এবং বলল, ‘সকল মহিমা প্রভুর জন্যে! এটি কোনো মানুষের কথা হতে পারে না।’ সে তখন কাবা শরিফে গেল, নিজের কবিতার টুকরা সেখান থেকে সরিয়ে ফেলল এবং সেখানে সুরা কাউসার লিখিত কাগজটি ঝুলিয়ে দিল। এমনও বর্ণিত আছে যে, সুরা কাউসারের শেষ তৃতীয় আয়াত এর নিচে সে একটি ছন্দপূর্ণ লাইন যোগ করে দেয়- ‘মা হাযা কালামুল বাশার’। অর্থাৎ এটি কোনো মানুষের কথা নয়।

 

Author: moq@2020@

Leave a Reply

Your email address will not be published.