সুরা আশ শোয়ারা (Surah ash-Suara 26, ayat 106, 124, 142, 161 and 177)

Sura ash sura

সুরা আশ শোয়ারা (Surah ash-Suara 26, ayat 106, 124, 142, 161 and 177)

কোরআন যে একদম নির্ভুল তার আরও একটি প্রমাণ পাওয়া যায় সুরা আশ শোয়ারার ১০৬, ১২৪, ১৪২, ১৬১ এবং ১৭৭ নম্বর আয়াতে। উপরের ৫ টি আয়াতে পাঁচ জন নবীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথম চার আয়াতে (১০৬, ১২৪, ১৪২ এবং ১৬১) যথাক্রমে নুহ নবী (২৬:১০৬), হুদ নবী (২৬:১২৪), সালেহ নবী (২৬:১৪২) এবং লুত নবীর (২৬:১৬১) কথা উল্লেখ করা হয়েছে। উপরের প্রতিটি আয়াতে উল্লিখিত চারজন নবীকেই তার জাতির ভাই বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু পঞ্চম আয়াতে (২৬:১৭৭) উল্লিখিত শোয়েব নবীকে তার জাতির জন্য ভাই বলা হয়নি। শুধুমাত্র শোয়েব বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠে কেন?

(২৬:১০৬) নং আয়াতে নুহ নবীকে তার জাতির ভাই বলে উল্লেখ করা হয়েছে,

إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ نُوحٌ أَلَا تَتَّقُونَ (106)

অর্থঃ যখন তাদের ভাই নুহ (এসে) তাদের বলল, (হে আমার জাতি) তোমরা কি (আল্লাহ্‌কে) ভয় করোনা?

(২৬:১২৪) নং আয়াতে হূদ নবীকে তার জাতির ভাই বলে উল্লেখ করা হয়েছে,

إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ هُودٌ أَلَا تَتَّقُونَ (124)

অর্থঃ যখন তাদের ভাই হূদ (এসে) তাদের বলল, তোমরা কি (আল্লাহ্‌কে) ভয় করবেনা?

(২৬:১৪২) নং আয়াতে সালেহ নবীকে তার জাতির ভাই বলে উল্লেখ করা হয়েছে,

إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ صَالِحٌ أَلَا تَتَّقُونَ (142)

অর্থঃ যখন তাদের ভাই সালিহ (এসে) তাদের বেলেছিল, তোমরা কি (আল্লাহ্‌কে) ভয় করবেনা?

(২৬:১৬১) নং আয়াতে লুত নবীকে তার জাতির ভাই বলে উল্লেখ করা হয়েছে,

إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ لُوطٌ أَلَا تَتَّقُونَ (161)

অর্থঃ যখন তাদের ভাই লুত (এসে) তাদের বেলেছিল, তোমরা কি (আল্লাহ্‌কে) ভয় করবেনা?

উপরের প্রতিটি আয়াতে উল্লিখিত চারজন নবীকেই তার জাতির ভাই বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু নিচের পঞ্চম আয়াতে (২৬:১৭৭) উল্লিখিত শোয়েব নবীকে তার জাতির জন্য ভাই বলা হয়নি। শুধুমাত্র শোয়েব বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠে কেন? উপরের চারটি আয়াতে যেহেতু চার নবীকে ভাই বলা হয়েছিল, সেহেতু এই আয়াতেও শোয়েব নবীকে ভাই বলার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি।

কিন্তু (২৬:১৭৭) নং আয়াতে শোয়েব নবীকে তার জাতির ভাই বলে উল্লেখ করা হয়নি,

إِذْ قَالَ لَهُمْ شُعَيْبٌ أَلَا تَتَّقُونَ (177)

অর্থঃ যখন শোয়েব (এসে) তাদের বেলেছিল, তোমরা কি (আল্লাহ্‌কে) ভয় করবেনা?

উপরের আয়াতে শুধুমাত্র শোয়েব নামটি উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু পুর্বের চারটি আয়াতের মত তাদের ভাই বলে উল্লেখ করা হয়নি। প্রশ্ন উঠে কেন? কারণ, কোরআনের অন্য একটি আয়াতে (০৭:৮৫) শোয়েব নবীকে তাদের ভাই বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

وَإِلَى مَدْيَنَ أَخَاهُمْ شُعَيْبًا قَالَ يَا قَوْمِ

অর্থঃ আর মাদীয়ান বাসীর কাছে (আমি পাঠিয়েছিলাম) তাদের ভাই শোয়েবকে…

এখন প্রশ্ন হল, (২৬:১৭৭) নং আয়াতে শোয়েব নবীকে তার জাতির ভাই বলে উল্লেখ করা হয়নি কিন্তু কোরআনের অন্য একটি আয়াতে (০৭:৮৫) শোয়েব নবীকে তাদের ভাই বলে উল্লেখ করা হল কেন?

এর কারণ হল মাদীয়ান শব্দটি দিয়ে দুইটি জিনিষকে বোঝায়। একটি হল জায়গা অর্থ্যাত মদীনা শহর। এবং অন্যটি হল জনগন বা মদীনার অধিবাসী। (০৭:৮৫) নং আয়াতে শোয়েব নবীকে তাদের ভাই বলা হয়েছে কারণ শোয়েব নবী মদীনাতেই জন্মগ্রহন করেছিলেন।

সুতরাং, জায়গার দিক থেকে চিন্তা করলে (০৭:৮৫) নং আয়াতে শোয়েব নবী তাদের ভাই। আর এজন্যই এই আয়াতে ভাই বলা হয়েছে।

কিন্তু, (২৬:১৭৭) নং আয়াতে শোয়েব নবীকে তার জাতির ভাই বলা হয়নি কারণ, ঐ সময় তার অধিবাসীরা আইকা নামের একটি গাছের পুজা করত। সুতরাং, বিশ্বাস বা ধর্মে্না।প্রেক্ষাপট থেকে ভাবলে শোয়েব নবী তাদের ভাই ছিলেননা। আর এজন্যই এই আয়াতে ভাই বলা হয়নি।

যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি একজন ভাষাবিদ ছিলেন, যিনি ওহী বর্ননার সময় এতই সতর্ক ছিলেন যে, জায়গার কারনে ভাই বলা গেলেও এবং ধর্মের কারনে যে সেই ভাতৃত্ব বন্ধন ছিন্ন হতে পারে, সে দিকেও লক্ষ্য রেখেছিলেন? নাউযুবিল্লাহ কোরআন আল্লাহর বানী।

Author: moq@2020@

Leave a Reply

Your email address will not be published.