যৌক্তিক সর্বোচ্চ ব্যবহার (Optimum Capacity Utilization)
প্রতিটি ব্যক্তি ও যন্ত্রের একটি নির্দিষ্ট কার্যক্ষমতা থাকে। একজন ব্যক্তি ২৪ ঘন্টা কাজ করলেও অস্বুস্থ হয়ে যাবে আবার একদম কাজ না করলেও অস্বুস্থ হয়ে যাবে। স্বুস্থ থাকতে হলে কাজ করা যেমন জরুরী তেমনি বিশ্রাম নেয়াও জরুরী। যন্ত্রের ক্ষেত্রেও একই রকম। একটি গাড়ি দীর্ঘদিন গ্যারেজে পরে থাকলে নষ্ট হয়ে যায়। আবার সারাদিন যদি ঐ গাড়িটি চলতে থাকে তাহলেও ইঞ্জিন গরম হয়ে গাড়িটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। প্রাতিষ্ঠানিক ভাবেও এর উদাহরণ লক্ষ্য করা যায়। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান অন্য সবদিক ভুলে শুধুমাত্র লাভ করার দিকেই মনোযোগী হয় এবং তারা নিয়ন্ত্রক সংস্থার আদেশ নিষেধের গুরুত্ব দেয় না। ফলে বাজারে তৈরী হয় অসম প্রতিযোগিতা। দেখা যায় এক বছর প্রচুর লাভ হয় কিন্তু পরের বছরেই এমন লোকসান হয় যে কর্মী ছাটাইয়ের প্রয়োজন পরে। লাফিয়ে লাফিয়ে করা উন্নয়ন কখনই প্রকৃত উন্নয়ন হতে পারে না। প্রকৃত উন্নয়ন হল ধারাবাহিক ও ভারসাম্যপুর্ণ উন্নয়ন। আবার দশটি বিষয়ের মধ্যে যে কোন একটি বিষয়ে অনেক উন্নয়ন করে বাকী নয়টি বিষয়ে দুর্বল থাকলে সেই উন্নয়নও প্রকৃত উন্নয়ন নয়। প্রকৃত উন্নয়ন হতে হলে দশটি বিষয়েই প্রয়োজন মাফিক এবং সমান গুরুত্ব দিতে হবে। উন্নয়ন প্রক্রিয়া ভারসাম্যপুর্ণ এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে না হলে জনসাধারনের জন্য নতুনত্বের সাথে খাপ খাওয়ানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পরে। ফলে জনসাধারনের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠে। কোরআনেও এ বিষয়ে (০২:২৩৩) উল্লেখ করা হয়েছে পরোক্ষভাবে।
وَالْوَالِدَاتُ يُرْضِعْنَ أَوْلَادَهُنَّ حَوْلَيْنِ كَامِلَيْنِ لِمَنْ أَرَادَ أَنْ يُتِمَّ الرَّضَاعَةَ وَعَلَى الْمَوْلُودِ لَهُ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ لَا تُكَلَّفُ نَفْسٌ إِلَّا وُسْعَهَا لَا تُضَارَّ وَالِدَةٌ بِوَلَدِهَا وَلَا مَوْلُودٌ لَهُ بِوَلَدِهِ وَعَلَى الْوَارِثِ مِثْلُ ذَلِكَ فَإِنْ أَرَادَا فِصَالًا عَنْ تَرَاضٍ مِنْهُمَا وَتَشَاوُرٍ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا وَإِنْ أَرَدْتُمْ أَنْ تَسْتَرْضِعُوا أَوْلَادَكُمْ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ إِذَا سَلَّمْتُمْ مَا آَتَيْتُمْ بِالْمَعْرُوفِ وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ (233)
অর্থঃ…কোন ব্যক্তির উপর তার সাধ্যাতীত বোঝা চাপিয়ে দেয়া যাবে না…
…No soul shall have a burden laid on it greater than it can bear…
যদিও উপরের আয়াতটি মায়েদের বুকের দুধ খাওয়ানোর বিষয়ে বলা হয়েছে তবুও বৃহত্তরভাবে চিন্তা করলে তা প্রাতিষ্ঠানিক ভাবেও সত্য। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রফিট করার ক্ষেত্রেও বোঝা চাপানো ঠিক নয়। কনভেনশনাল ব্যংকগুলো সবসময় শুধুমাত্র প্রফিট ম্যাক্সিমাইজেশনের দিকে নজর দেয়। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা মাত্রাতিরিক্ত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা মেনে চলার ফলে প্রফিট মিনিমাইজেশনের দিকেই তাদের গন্তব্য হয়। কিন্তু ইসলামী ব্যংকিং নৈতিকতার ভিত্তিতে মধ্যপন্থা অবলম্বন করে। আর এজন্যই তারা প্রফিট অপটিমাইজেশনের দিকে লক্ষ্য রাখে।
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ব্যক্তি ও সম্পদের যৌক্তিক-সর্বোচ্চ-ব্যবহারের উপকারী দিকগুলোর উপর গবেষনা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।