মানব-জাতির রিযিকের বন্দোবস্ত
قُلْ تَعَالَوْا أَتْلُ مَا حَرَّمَ رَبُّكُمْ عَلَيْكُمْ أَلَّا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَلَا تَقْتُلُوا أَوْلَادَكُمْ مِنْ إِمْلَاقٍ نَحْنُ نَرْزُقُكُمْ وَإِيَّاهُمْ وَلَا تَقْرَبُوا الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَلَا تَقْتُلُوا النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ ذَلِكُمْ وَصَّاكُمْ بِهِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ (151)
দারিদ্রের ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা কর না। আমিই তোমাদেরকে রিজিক দেই এবং তাদেরকেও। (আনআম, ০৬ : ১৫১)
وَلَا تَقْتُلُوا أَوْلَادَكُمْ خَشْيَةَ إِمْلَاقٍ نَحْنُ نَرْزُقُهُمْ وَإِيَّاكُمْ إِنَّ قَتْلَهُمْ كَانَ خِطْئًا كَبِيرًا (31)
অভাব-অনটনের ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা কর না। আমিই তাদেরকে রিজিক দেই এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয় তাদের হত্যা করা মহাপাপ। (ইসরা, ১৭ : ৩১)
১৭৯৮ ঈসায়ি সালে ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ রবার্ট ম্যালথাস জনসংখ্যানীতির ওপর তার প্রসিদ্ধ প্রবন্ধ প্রকাশ করেন। তিনি যুক্তি দেখান যে, মানুষ বৃদ্ধি পায় গাণিতিক হারে, কিন্তু সম্পদ বৃদ্ধি পায় জ্যামিতিক হারে। অর্থাৎ জনসংখ্যা বাড়ে ১, ২, ৪ ও ৮ হারে। কিন্তু সম্পদ বাড়ে শতকরা ৩, ৫ কিংবা ১০ হারে। তিনি বলেন, অল্প কয়েক বছরের মধ্যে জনসংখ্যা দাঁড়াবে দ্বিগুণ কিংবা তিনগুণ। কিন্তু সম্পদ বৃদ্ধি পাবে কেবল একটি নির্দিষ্ট মাত্রার শতকরা হারে। এই অনুমানের ওপর ভিত্তি করে তিনি ভবিষ্যৎবাণী করেন যে, যদি জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তবে পৃথিবীতে প্রবল খাদ্যাভাব দেখা দিবে। সকল শিল্পোন্নত দেশই বর্তমানে ম্যালথাসের তত্ত্বকে অনুসরণ করছে এবং তাদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। এই অবস্থা ঠিক তেমনি যেমনটি কুরআন মাজিদ অবতীর্ণ হওয়ার প্রাক্কালে আরব সমাজে ছিল। আরবরা তাদের কন্যা সন্তানদের হত্যা করত। মানুষ বর্তমানে হত্যা করছে না, কিন্তু দারিদ্রের ভয়ে শিশুর জন্ম নিয়ন্ত্রণ করছে। ম্যালথাসের তত্ত্ব ও মানুষের ভয়ের বিপরীতে আল্লাহ তাআলা আছেন এবং মানুষের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ করছেন। সন্দেহ নেই আফ্রিকার কোনো কোনো অঞ্চলে দুর্ভিক্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব কিছুই ঘটেছে কিছু দায়িত্ব-জ্ঞানহীন মানুষের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে। পুরো মানব সমাজ কোনো গণদুর্ভিক্ষে পতিত হয় নি কিংবা প্রত্যক্ষ করে নি, যা কুরআন মাজিদের একটি ভবিষ্যৎবাণী।