বিপরীত বস্তুর উপস্থিতি
سُبْحَانَ الَّذِي خَلَقَ الْأَزْوَاجَ كُلَّهَا مِمَّا تُنْبِتُ الْأَرْضُ وَمِنْ أَنْفُسِهِمْ وَمِمَّا لَا يَعْلَمُونَ (36)
পবিত্র ও মহান সে সত্তা যিনি সবকিছু জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছেন, পৃথিবী যা উৎপন্ন করে তা থেকে, তাদের (মানুষের) নিজেদের মধ্য থেকে এবং সেসব কিছু থেকেও যা তারা জানে না। (ইয়াসিন, ৩৬ : ৩৬)
বলার অপেক্ষা রাখে না, পৃথিবী বিভিন্ন খনিজ পদার্থ উৎপাদন করে। বিজ্ঞানের সাপ্রতিক গবেষণা প্রমাণ করেছে, প্রত্যেক খনিজ পদার্থই হয়ত ধনাত্মক কিংবা ঋনাত্মক আধান বিশিষ্ট অতি পারমাণবিক কণিকা দ্বারা গঠিত। কুরআন মাজিদে এই সত্যটি অবতীর্ণ হয়েছে এই বলে, পৃথিবী থেকে উৎপাদিত সকল বস্তুই জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করা হয়েছে। খনিজ পদার্থের পাশাপাশি এমনকি পানিও যা পৃথিবী উৎপাদন করে, তাও বিপরীতধর্মী যৌগমূল দ্বারা গঠিত। পানি গঠিত হয় দুটি বিপরীতধর্মী উপাদনা দ্বারা। একটি ধনাত্মক উপাদানবিশিষ্ট হাইড্রোজেন অনু এবং অপরটি ঋনাত্মক উপাদান বিশিষ্ট অক্সিজেন অনু। অধিকন্তু পৃথিবী থেকে উৎপন্ন জোড়া জোড়া বস্তুসমূহ আরও অন্তর্ভুক্ত করতে পারে সেসব সমজাতীয় জোড়া, যা তাদের দৈহিক ও রাসায়নিক ধর্মের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন। যেমন- ধাতু ও অধাতু। অনুরূপ বিপরীতধর্মী উপাদানবিশিষ্ট জোড়া যেমন, ধনাত্মক ও ঋনাত্মক উপাদানবিশিষ্ট আয়ন থেকে ধনাত্মক ও ঋনাত্মক বৈদ্যুতিক উপাদানসমূহ চৌম্বকীয় বিপরীতধর্মী জোড়া, যেমন- চুম্বকের উত্তরপ্রান্ত ও দক্ষিণপ্রান্ত, আকর্ষণ ও বিকর্ষণ শক্তি, তেমনিভাবে কেন্দ্রনির্গত শক্তির মাধ্যমে মধ্যাকর্ষণ ভারসাম্য ইত্যাদি।
মানবিক জোড়ার ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে- পুরুষ ও মহিলার লিঙ্গভেদ, পরিপূর্ণ ব্যক্তিত্ব প্রকাশক গুণ, যেমন- নিষ্ঠুরতা ও দুঃখ কাতরতা, সাহস ও ভয়, উদারতা ও কৃপণতা ইত্যাদি। অতঃপর যে কেউ সহজে উপসংহারে আসতে পারে যে, জোড়ার রহস্য পুরুষ ও মহিলা কিংবা বিপরীত বৈদ্যুতিক উপাদান ও বিপরীতধর্মী গুণ মানব জাতিসহ সব ধরনের প্রাকৃতিক বিষয় ও শক্তিসমূহের মধ্যে বিদ্যমান। এ কথা উপরোক্ত কুরআনি আয়াতে পরিষ্কারভাবে বর্ণিত হয়েছে। এখন আমরা নিজেদেরকে আরো একবার প্রশ্ন
করি, মুহাম্মদ (সাঃ ) এর মত একজন মানুষ যিনি না লিখতে পারতেন, না পড়তে। এমনকি যিনি নিজের নামটি পর্যন্ত স্বাক্ষর করতে পারতেন না, তিনি কি কুরআন মাজিদের গ্রন্থকার হতে পারেন? না তা এমন একটি গ্রন্থ যা সর্বজ্ঞ ও জ্ঞানময় আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তাঁর ওপর অবতীর্ণ হয়েছে?
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি ঐ আমলে বিপরীত-বস্তু বা অয়ান্টি-মেটারের উপর গবেষনা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।