দলগত প্রচেষ্টা (Team Work)

Team work

দলগত প্রচেষ্টা (Team Work)

কথায় আছে দশের লাঠি একের বোঝা। এক জনের জন্য যে কাজ অসম্ভব সেই কাজ দশজনে করলে সহজসাধ্য হয়ে যায়। প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রেও দলগত প্রচেষ্টা গুরুত্ব অনেক। প্রাতিষ্ঠানিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে দলগত শারীরিক প্রচেষ্টার সাথে সময়ের সম্পর্ক আছে। একটি কাজের জন্য একটি দলে শ্রমিকের সংখ্যা যত বেশি হবে, ঐ কাজটি সম্পাদন করতে তত কম সময় লাগবে। আবার, বুদ্ধি শ্রমের ক্ষেত্রেও দলগত প্রচেষ্টা বিকল্প নেই। একটি বড় সফটওয়ার তৈরী করা একজন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু যদি এক এক জন ব্যক্তি ঐ কাজের এক এক অংশের কাজ সম্পাদন করে এবং পরবর্তীতে যদি কাজের ঐ অংশগুলো একত্রিত করা হয় তাহলেই একটি বড় সফটওয়ার তৈরী করা সম্ভব। একজন ডাক্তার চিকিৎসা করে, ডাক্তারের সহকারী টেস্ট করে এবং রিপোর্ট তৈরী করে আর সহাকারী ফার্মাসিস্ট প্রেশকিপশন তৈরী করে। এভাবে সবার সম্মিলিত চেষ্টাতেই একজন রোগী চিকিৎসা পায়। ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে আর্কিটেক বিল্ডিং এর নকশা তৈরী করে, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ঐ বিল্ডিং বানাতে কোন কোন সামগ্রী কি কি পরিমানে লাগবে তার এস্টিমেট নির্ধারণ করে। শ্রমিকেরা শারীরিক শ্রম দেয়। আর সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই তৈরী হয় নতুন একটি বিল্ডিং । বড় বড় কাজের ক্ষেত্রে দলগত প্রচেষ্টার কোন বিকল্প নেই। দলগত কাজ করতে গেলে ভিন্ন ভিন্ন মত তৈরী হতে পারে। কিন্তু সম্মিলিত আলোচনার মাধ্যমে সেই সমস্যার সমাধান করা যায়। কোরআনে (০৩:১৫৯) আয়াতে দলগত প্রচেষ্টা এবং সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সম্মিলিত আলোচনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

فَبِمَا رَحْمَةٍ مِنَ اللَّهِ لِنْتَ لَهُمْ وَلَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِيظَ الْقَلْبِ لَانْفَضُّوا مِنْ حَوْلِكَ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِينَ (159)

অর্থঃ…অতএব তুমি এদের অপরাধসমুহ মাফ করে দাও, এদের জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং কাজ কর্মের ব্যাপারে এদের সাথে পরামর্শ কর

Pass over (their faults), and ask for (God’s) forgiveness for them; and consult them in affairs (of moment).

অন্য একটি (৪২:৩৮) আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে,

وَالَّذِينَ اسْتَجَابُوا لِرَبِّهِمْ وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَأَمْرُهُمْ شُورَى بَيْنَهُمْ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُونَ (38)

অর্থঃ যারা তাদের মালিকের ডাকে সারা দেয়, নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাদের কাজকর্মগুলো (সম্পাদনের সময়) পারষ্পরিক পরামর্শই হয় তাদের (কর্ম-) পন্থা, আমি তাদের যে রিযিক দান করেছি তা থেকে তারা আমারই পথে খরচ করে।

…and those who do their work through mutual consultation…

উপরের দুটি আয়াতে কাজ কর্মের ব্যাপারে পরামর্শ করার কথা বলা হয়েছে। পরামর্শের ফলে একটি কাজের ভুলভ্রান্তি বেরিয়ে আসে এবং তা থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তীতে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়। স্বার্থপর নেতারা সাধারণত নিজের সিদ্ধান্তকেই চাপিয়ে দিতে চায় যা জনসাধারণেরও কাছে গ্রহনযোগ্য হয়না। কিন্তু সম্মিলিত সিদ্ধান্ত যেমন সঠিক হয় তেমনি তা সকলের নিকট গ্রহণযোগ্যও হয়।

যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি সম্মিলিত সিদ্ধান্তের উপকারিতার উপর গবেষনা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছেন? নাউযুবিল্লাহ কোরআন আল্লাহর বানী।

Author: moq@2020@

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *