শ্রবণেন্দ্রীয়ের রহস্য

Ear

শ্রবণেন্দ্রীয়ের রহস্য

قُلْ مَنْ يَرْزُقُكُمْ مِنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ أَمَّنْ يَمْلِكُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَمَنْ يُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَيُخْرِجُ الْمَيِّتَ مِنَ الْحَيِّ وَمَنْ يُدَبِّرُ الْأَمْرَ فَسَيَقُولُونَ اللَّهُ فَقُلْ أَفَلَا تَتَّقُونَ (31)

বল, আসমান ও জমিন থেকে কে তোমাদের রিযক দেন? অথবা কে তোমাদের শ্রবণ ও দৃষ্টিসমূহের মালিক? (ইউনুস, ১০ : ৩১)

وَلَا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ إِنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا (36)

আর যে বিষয় তোমার জানা নাই তার অনুসরণ কর না। নিশ্চয় কান, চোখ ও অন্তঃকরণ এদের প্রতিটির ব্যাপারে সে জিজ্ঞাসিত হবে। (ইসরা, ১৭ : ৩৬)

إِنَّا خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ مِنْ نُطْفَةٍ أَمْشَاجٍ نَبْتَلِيهِ فَجَعَلْنَاهُ سَمِيعًا بَصِيرًا (2)

আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, আমি তাকে পরীক্ষা করব, ফলে আমি তাকে বানিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টি শক্তিসম্পন। (ইনসান, ৭৬ : ০২)

উল্লেখ্য যে, এসব আয়াত ও অন্যান্য আয়াতে যেখানেই কুরআন মাজিদে শ্রবণ, দর্শন ও অন্তঃকরণের  উল্লেখ হয়েছে, শ্রবণেন্দীয়কে অন্যান্য ইন্দ্রীয়ের পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি একটি জ্ঞাত বিষয় যে, মানুষের জ্ঞান অর্জনের বিষয়টি অন্যান্য অঙ্গের তুলনায় শ্রবণ ইন্দ্রীয়ের ওপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। একজন শিশু অন্ধ হয়ে জন্ম নিলে তাকে অনেক বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু অল্প আয়াসেই সে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারে। পক্ষান্তরে, যে শিশু বধির হয়ে জন্ম নেয়, যে কোনো বস্তু সম্পর্কে জানতে তার অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়। কুরআন মাজিদ এভাবে অন্যান্য ইন্দ্রীয়ের ওপর শ্রবণেন্দ্রীয়ের গুরুত্ব তুলে ধরেছে। অধিকন্তু আরো উল্লেখ্য থাকে যে, ভ্রুণে শ্রবণেন্দ্রীয় বিকশিত হয় গর্ভধারণের কেবল বাইশ দিনের

মধ্যেই এবং গর্ভধারণের চতুর্থ  মাসে তা পুরোপুরি কাজ করতে শুরু করে। তখন ভ্রুণ মায়ের পাকস্থলীর গুড়গুড় শব্দ শুনতে পায় এবং সে শব্দও শুনতে পায় যা সে (মা) আহার ও পান করার সময় সৃষ্টি করে। এমন কি মায়ের চারপাশের শব্দও ভ্রুণটি শুনতে পায়। এভাবে শ্রবণেন্দ্রীয় বিকশিত হয় এবং জীবনের অন্যান্য ইন্দ্রীয়ের অনেক আগেই একজন নবজাতকের মধ্যে তা কাজ করতে শুরু করে। কুরআন মাজিদ মানুষের অন্যান্য অঙ্গের পূর্বে শ্রবণেন্দ্রীয়ের কথা উল্লেখ করার পেছনে এটিকে একটি কারণ বলা যেতে পারে। রাসুলের (সাঃ ) সুন্নতও এই বিষয়টিকে সমর্থন করে। তাঁর সুন্নত আমাদেরকে শিক্ষা দেয়, যখনই কোনো নতুন শিশু জন্মগ্রহণ করে আমরা যেন তার উভয় কানে আজান ও ইকামাতের বাক্যগুলি বলে শুনাই।

এটি অত্যন্ত— লক্ষণীয় বিষয় যে, কুরআন মাজিদ শ্রবণ ইন্দ্রিয়ের ক্ষেত্রে সর্বদা এক বচনের শব্দ ব্যবহার করেছে, পক্ষান্তরে দর্শন ইন্দ্রিয়ের জন্যে বহুবচনের শব্দ ব্যবহার করেছে। সাপ্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রেইনে যে ভিজুয়েল সেন্টার (দর্শন কেন্দ্র) রয়েছে যাকে Occipital lobe বলা হয়, তা দুইটি সমজাতীয় অংশে বিভক্ত। পক্ষান্তরে, হিয়ারিং সেন্টার (শ্রবণ কেন্দ্র) হচ্ছে একটি। কুরআন মাজিদের এ ধরনের সুনির্দিষ্ট শব্দ চয়ন তার অন্য একটি মুজিজা।

 

Author: moq@2020@

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *