শূকরের মাংসের বিপত্তি

Pork

শূকরের মাংসের বিপত্তি

إِنَّمَا حَرَّمَ عَلَيْكُمُ الْمَيْتَةَ وَالدَّمَ وَلَحْمَ الْخِنْزِيرِ وَمَا أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللَّهِ فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلَا عَادٍ فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ (173)

তিনি (আল্লাহ) তোমাদের ওপর হারাম করেছেন মৃত জীব, রক্ত, শূকরের মাংস এবং সেসব জীব-জন্তু ‘ যা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে উৎসর্গ করা হয়। অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমান ও সীমালংঘনকারী না হয় তার জন্যে কোনো পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল ও দয়ালু।(বাকারা, ০২ : ১৭৩)

কুরআন মাজিদ কেন শূকরের মাংস ব্যবহার নিষেধ করে তা বহু শতাব্দী পর্যন্ত একটি রহস্য হয়ে রয়েছে। সাপ্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় জানা গেছে, শূকরের মাংস মানুষের শরীরের জন্য অত্যধিক ক্ষতিকর। কিছুদিন পূর্বেও মনে করা হত শূকরের মাংসে একপ্রকার

পরজীবি জীবাণু থাকে যা মানুষের শরীরের জন্য একমাত্র বিপত্তির কারণ। বৈজ্ঞানিকরা

বর্তমানে শূকরের মাংসের আরও অনেক ক্ষতিকর দিক আবিষ্কার করেছেন।

সেসব গবেষণার কিছু নিন্মে তুলে ধরা হল :

১) শূকরের মাংসে একটি প্রোটিন রয়েছে, যা বিভিন্ন ধরনের এলার্জি সৃষ্টি করে। যেমন, হাঁপানি, খোস

পাঁচড়া ও একজিমা ইত্যাদি।

২) শূকরের মাংসে প্রচুর পরিমাণে শ্লেষ্মা জাতীয় পদার্থ রয়েছে। এগুলি সালফারে সমৃদ্ধ এবং গিঁটসমূহে ও শরীরের জোড়াগুলিতে ব্যথা-বেদনার সৃষ্টি করে।

৩) শূকরের মাংস রক্তের প্রবাহে চর্বিজাতীয় পদার্থের অনুপাত বাড়িয়ে দেয়। প্রাণী মাংসে দু’ধরনের চর্বি থাকে। একটি হল বাহ্যিক যা মাংসকে ঢেকে রাখে। অপরটি হল অভ্যন্তরীণ, যা থাকে মাংসপেশীর তন্তুসমূহে। নিন্মে সাধারণ মাংসের আভ্যন্তরীণ পেশীতে চর্বির পরিমাণ দেখানো হল :

বাছুরের মাংস  ১০%, ভেড়া ২০%, মেষ শাবক ২৩%, শূকরের মাংস ৩৫%। রক্তে চর্বির উচ্চমাত্রা কতিপয় স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার সৃষ্টি করে। যেমন, বার্ধক্য, জ্বরাগ্রস্থতা, প্যারালাইসিস ও হৃদযন্ত্র সম্বন্ধীয় বিভিন্ন রোগ। শূকরের মাংসের উচ্চমাত্রার চর্বি মানব স্বাস্থ্যের জন্য সর্বাধিক বিপজ্জনক।

৪) শূকরের মাংসের উচ্চমাত্রার চর্বির আরেকটি ক্ষতিকর দিক হল, তা ভিটামিন ‘ই’র অতিরিক্ত ক্ষয়সাধন করে। ভিটামিন ‘ই’র এই ক্ষয়সাধন বা ঘাটতি পরিণামে ভিটামিন ‘এ’র ক্ষয় সাধন করে। এভাবে শূকরের মাংস শরীরের ভিটামিন ‘ই’ ও ‘এ’র ক্ষয় সাধনের মাধ্যমে শরীরবৃত্তীয় কাজে বিশৃক্সখলার সৃষ্টি করে।

৫) এও দেখা গেছে যে, শূকর নোংরা ও ঘৃণিত বস্তু ভোগ ও আহার

করে।  শূকরের মাংস ভক্ষণের ফলে এভাবে বিভিন্ন প্রকার এলার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া ও মানব দেহে লসিকা প্রণালীতে নানা বিশৃক্সখলা দেখা দেয়।

৬) শূকরের মাংসের কারণে অন্য একটি প্রাণঘাতি ব্যধি জন্ম নেয়, যা সঞ্চারিত হয়। যদিও পশ্চিমাদের সাম্প্রতিক উৎকর্ষের ফলে এই জীবাণু দূর করা যেতে পারে।

৭) অনেক মুসলিম কর্মী চিহ্নিত করেছে, শূকরই একমাত্র প্রাণী যে তার স্ত্রী সঙ্গীর সম্ভ্রমহানীর ব্যাপারে সজাগ নয় এবং তার জন্যে লড়াই করে না। এ থেকে বুঝা যায়, মানুষের ওপর শূকরের মাংসের একটি বিশেষ নৈতিক নেতিবাচক প্রভাবও রয়েছে।

বলাবাহুল্য, যখন কুরআন শূকরের মাংসকে হারাম ঘোষণা করে তখন এসব তথ্য মানুষের জানা ছিল না।

 

Author: moq@2020@

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *