মুমিনদের বিজয়
وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آَمَنُوا مِنْكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِي الْأَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ الَّذِي ارْتَضَى لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُمْ مِنْ بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْنًا يَعْبُدُونَنِي لَا يُشْرِكُونَ بِي شَيْئًا وَمَنْ كَفَرَ بَعْدَ ذَلِكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ (55)
তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে এই মর্মে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তিনি নিশ্চিতভাবে তাদেরকে জমিনে প্রতিনিধিত্ব দান করবেন, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব দান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদের এবং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য শক্তিশালী ও সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন তাদের দীনকে, যা তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তিনি তাদের ভয়-ভীতি (এর অবস্থা) শান্তি-নিরাপত্তায় পরিবর্তিত করে দেবেন।
(নূর, ২৪ : ৫৫)
এই আয়াত অবতীর্ণ হয় যখন সবেমাত্র মহানবী (সাঃ) মদিনায় হিজরত করেছেন। এটি অবশ্যই লক্ষ্যণীয় বিষয় যে, তখন মুসলমানরা নিত্য ভয়-ভীতি ও শংকায় কালাতিপাত করতেন। মক্কার কাফিরদের পক্ষ থেকে আক্রমণের শংকা সদা বিরাজ করত এবং মদিনার ইহুদিদের বিরুদ্ধাচারণের ভয়ও ছিল। পরিস্থিতি এতই সঙ্কটাপন্ন ছিল যে, কিছু কিছু সাহাবি কেঁদে উঠে বলেন, ‘এমন কোনো দিন ছিল না যখন আমরা আমাদের শরীর থেকে রণসজ্জা ত্যাগ করতে পারি এবং শত্রুদের পক্ষ থেকে আক্রমণের ভয় ব্যতিরেকে কোনো সকাল কিংবা সন্ধ্যা অতিক্রম করতে পারি।’ এই ছিল অবস্থা যখন কুরআন মাজিদ তিনটি বিশেষ ভবিষ্যৎবাণী প্রদান করে। প্রথমত, আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে তাদের জমিনে শক্তিশালী করবেন। দ্বিতীয়ত, তিনি তাদের দীনকে (ইসলামকে) সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন। আর তৃতীয়ত, তিনি তাদের ভয়-ভীতির
অবস্থাকে শান্তি ও নিরাপত্তায় বদলে দেবেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, খায়বার, যা ছিল ইহুদিদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী যুদ্ধ, যা সংগঠিত হয় হিজরি সপ্তম শতাব্দীতে-এতে ইহুদিরা মুসলমানদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। দেশের রাজধানী শহর মক্কার কাফিররা মুসলমানদের কাছে আত্মসমর্পণ করে হিজরি অষ্টম শতাব্দীতে। ইসলাম তখন রাষ্ট্রীয় ধর্মে পরিণত হয় এবং মুসলমানরা একটি শান্তিময় ও নিরাপদ রাষ্ট্র লাভ করে। এভাবে দশ বছরের সংক্ষিপ্ত পরিসরে কুরআন মাজিদের ভবিষ্যৎবাণীসমূহ বাস্তবরূপ লাভ করে।