ব্যবস্থাপনার কৌশল (Management Strategy)
প্রতিটি বড় বড় প্রতিষ্ঠানের ম্যনেজমেন্ট বিভিন্ন ধরণের কৌশল ব্যবহার করে ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এদের মধ্যে বহুল প্রচলিতগুলো হচ্ছে, ‘Divide and rule’, ‘Carrot and stick’, ‘Carrot and rabbit’, ‘Break and force’, ‘Reward the best’, ‘Devaluate power and position’ ইত্যাদি।
Divide and rule হল বড় শক্তিকে ভেঙ্গে ছোট ছোট করা। কারণ, ছোট শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করা সহজ। Carrot and stick হল ভাল কাজের সুফল এবং খারাপ কাজের কুফল বর্ণনা করে মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা। Carrot and rabbit হল মানুষের দুর্বল দিক খুঁজে বের করা এবং তারপর সেই কাঙ্খিত বস্তুর লোভ দেখিয়ে কাজ আদায় করা। Break and force হল নীতি নৈতিকতার তোয়াক্কা না করে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া। Reward the best হল যোগ্য ব্যক্তিকে পুরষ্কৃত করা। আর Devalue power and position হল মানুষের ক্ষমতা ও পদবী কমিয়ে তাকে নিয়ন্ত্রণ করা। তবে উপরের কৌশলগুলো থেকে কোরআনে ‘Carrot and stick’ পদ্ধতিটিকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। অর্থ্যাৎ, খারাপ কাজের কুফল এবং ভাল কাজের সুফল বর্ণনা করে নিয়ন্ত্রণ করা। কোরআনের (৫৮:১৭) এবং (৫৮:২২) আয়াতে এ সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে।
لَنْ تُغْنِيَ عَنْهُمْ أَمْوَالُهُمْ وَلَا أَوْلَادُهُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا أُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ (17)
অর্থঃ আল্লাহ তায়ালার (শাস্তির) কাছ থেকে (তাদের বাঁচানোর জন্যে) সেদিন তাদের ধনসম্পদ, সন্তান সন্ততি কোনটাই কোন কাজে আসবেনা, তারা তো দোযখেরই বাসিন্দা, সেখানে তারা চিরকাল অবস্থান করবে।
…they will be the dwellers of the fire, to dwell therein forever.
উপরের আয়াতে খারাপ কাজের কুফল হিসেবে জাহান্নামের ভয় দেখানো হচ্ছে। আবার এর কয়েকটি পরের আয়াতেই ভাল কাজের সুফল হিসেবে জান্নাতের ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। কোরআনের (৫৮:২২) নং আয়াতে জান্নাতের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
لَا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآَخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آَبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ أُولَئِكَ كَتَبَ فِي قُلُوبِهِمُ الْإِيمَانَ وَأَيَّدَهُمْ بِرُوحٍ مِنْهُ وَيُدْخِلُهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ أُولَئِكَ حِزْبُ اللَّهِ أَلَا إِنَّ حِزْبَ اللَّهِ هُمُ الْمُفْلِحُونَ (22)
অর্থঃ …এ (আপসহীন) ব্যক্তিরাই হচ্ছে সেসব লোক, যাদের অন্তরে আল্লাহ তায়ালা ঈমানের ফয়সালা একে দিয়েছেন এবং নিজস্ব গায়বী মদদ দিয়ে তিনি এ দুনিয়ায় তাদের শক্তি বৃদ্ধি করেছেন, কিয়ামতের দিন তিনি তাদের এমন এক জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হবে, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে…
And we will admit them to gardens beneath which rivers flow, wherein they abide eternally.
উপরের আয়াতে লক্ষ্য করলে সহজেই অনুধাবন করা যায় যে, আল্লাহ খারাপ কাজের কুফল এবং ভাল কাজের সুফল বর্ণনা সঠিক পথ বাছাই করতে নির্দেশ দিচ্ছেন। আর দুনিয়াতেও বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রাতিষ্ঠানিক খারাপ কাজের কুফল এবং ভাল কাজের সুফল বর্ণনা সঠিক পথে চলতে উৎসাহী করা উচিত। তাহলেই অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌছানো সম্ভব হবে।
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কৌশলের উপর গবেষনা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।