ব্যক্তিগত কোন আবেগের স্থান নেই কোরআনে
একজন (মানব) লেখক প্রায়ই তার পারিপার্শ্বিক পরিবেশের পরিবর্তিত অবস্থার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে। যা পরবর্তীতে তার আবেগ-অনুভূতিকে আলোড়িত করে। আর তা পরবর্তীতে তার লেখার স্টাইল ও রূপে প্রতিফলিত হয়। কবিদের ক্ষেত্রেও এ বিষয়টি অধিক বেশি সত্য। কেননা, কবিতা সর্বদা লেখকের মনন-মেজাজ ও আবেগের প্রতিফলন ঘটায়। উল্লিখিত বিষয়ের নিরিখে বলা যায়, কুরআন মাজিদ কাব্যধর্মী ভাষায় লিখিত হয়েছে, তবে এ কথা লক্ষ্যণীয় যে, মুহাম্মদ (সাঃ) তাঁর দীর্ঘ ২৩ বছরের মিশনে অনেক ব্যক্তিগত বিপদাপদ ও বিজয়ের মধ্য দিয়ে পথ অতিক্রম করেছেন। তিনি নবুওয়াতের সপ্তম বছরেও নিদারুণ কষ্ট ও কঠোরতার সম্মুখীন হন, যখন তিনি ও তার সকল আত্মীয় পরিজন মক্কা থেকে বহিষ্কৃত হন এবং তিন বছর যাবত জীবনের সবধরনের মৌলিক প্রয়োজন থেকে বঞ্চিত থাকেন। পরবর্তীতে ৮ম হিজরিতে তিনি একটি গৌরবময় বিজয় উপভোগ করেন। যখন তিনি ১০,০০০ (দশ হাজার) মুসলিম সেনাদলের প্রধান হিসেবে মক্কায় প্রবেশ করেন এবং মক্কার সকল আত্মসমর্পণকারী লোককে সদয়ভাবে গ্রহণ করেন। যদি মুহাম্মদ (সাঃ) কুরআন মাজিদের লেখক হতেন তবে তার নবুওয়াতি মিশনের বিভিন্ন পরিস্থিতি ও সময়ে তার ব্যক্তিগত আবেগ-অনুভূতিসমূহ কুরআনের ভাষায় প্রতিফলিত হত। কিন্তু সত্য হল, কুরআন মাজিদের স্টাইল কিংবা রচনাশৈলীতে এসবের কোনো প্রতিফলন দেখা যায় না। সব ধরনের পরিবেশগত উত্থান-পতন ও পরিবর্তনের ছোঁয়া থেকে বেঁচে থেকে কুরআন মাজিদের ভাষা এখনও পর্যন্ত সমহিমায় অটল-অবিচল।