বৃষ্টির মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রাণের জাগরণ
وَالَّذِي نَزَّلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً بِقَدَرٍ فَأَنْشَرْنَا بِهِ بَلْدَةً مَيْتًا كَذَلِكَ تُخْرَجُونَ (11)
আর (আল্লাহ) যিনি আকাশ থেকে বারি বষর্ণ করেন পরিমিত পরিমাণে। অতঃপর আমি (আল্লাহ) তা দ্বারা পুনরুজ্জীবিত করি মৃত ভূভাগকে। তেমনিভাবেই তোমরা উত্থিত হবে। (যুখরুফ, ৪৩: ১১)
أَوَلَمْ يَرَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَاهُمَا وَجَعَلْنَا مِنَ الْمَاءِ كُلَّ شَيْءٍ حَيٍّ أَفَلَا يُؤْمِنُونَ (30)
আর আমি তৈরি করেছি পানি থেকে প্রাণবন্ত সবকিছুকে। এরপরেও কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না? (আম্বিয়া, ২১ : ৩০)
সজীব বস্তুর মৌলিক রাসায়নিক উপাদান হল হাইড্রোজেনের সেতুবন্ধন, যাকে বলা হয় ‘হাইড্রোজেন বন্ড’। এই হাইড্রোজেন কেবল পানির আয়োনাইজেশানের মাধ্যমেই প্রতিস্থাপিত হতে পারে। এ কারণেই প্রাণের জন্যে পানি অপরিহার্য। একটি পানিশূন্য বস্তু জমাট কঙ্কালের মত, যদিও তা তার জেনেটিক কোডসহ DNA সংরক্ষণ করে থাকে। এটি প্রয়োজন পরিমাণ হাইড্রোজেন আয়ন গ্রহণ করা ব্যতীত না পুনরুৎপাদন করতে পারে, আর না পারে ক্রিয়াশীল হতে। যখন পানি পৌঁছে এবং হাইড্রোজেন-আয়ন প্রদান করে, তখন প্রাণের জেনেটিক কোড সক্রিয় হয়। এটি ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে অতি সাধারণ ঘটনা। প্রায় ১০০ বছর পূর্বে এ তথ্য আবিষ্কৃত হয় যে, বিভিন্ন ধরনের প্রাণ সত্তা দ্বারা মাটি গঠিত। প্রায় চল্লিশ বছর পূর্বে আবিষ্কৃত হয়, মাটির ৮০ ভাগ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা গঠিত। তারা বৃষ্টির পানি পাওয়া মাত্রই প্রয়োজন পরিমাণ হাইড্রোজেন আয়ন গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন পুনরুৎপাদনশীল কর্মতৎপরতা শুরু করে। বৃষ্টির পানি এভাবে মৃত ভূমিতে পুনরুজ্জীবন নিয়ে আসে। বিজ্ঞানীরা যা আবিষ্কার করেছেন সাপ্রতিক সময়ে কুরআন মাজিদ তার বর্ণনা দিয়েছে বহু শতাব্দী পূর্বে।
ধারণা করা হয়, আদম আলাইহিস সালাম থেকে এ পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রায় দশ বিলিয়ন মানুষ বসবাস করেছে। প্রত্যেক ব্যক্তির জেনেটিক কোডের আকার প্রায় এক মিলিমিটারের দশ লক্ষ ভাগের একভাগ)।
যদি আমরা তাদের সকলের জেনেটিক কোড সংগ্রহ করি, তবে তাতে একটি চায়ের পেয়ালাও পূর্ণ হবে না। এসব জেনেটিক কোড এখনও মাটির নিচে সংরক্ষিত আছে। এটি তেমনি সুনিশ্চিত যে, যখন আল্লাহ তাআলা এক ছিটা বৃষ্টির ফোটায় মৃত ভূমিকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারেন, তেমনি তাঁর ক্ষমতা রয়েছে জেনেটিক কোডসমূহকে সাধারণ হাইড্রোজেন বন্ডের যোগান দেয়া। তখন কিয়ামত দিবসে সকল মানুষ জেগে ওঠবে। কুরআন মাজিদ তারই বর্ণনা প্রদান করে, ‘তেমনিভাবেই তোমরা পুনরুত্থিত হবে।’
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি ঐ আমলে পানি, মাটি এবং DNA এর উপর গবেষনা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।