তথ্য নিশ্চিতকরণ (Confirmation of Information)
প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে তথ্য নিশ্চিতকরণের গুরুত্ব অনেক। মানুষ তথ্য সংগ্রহে তার পঞ্চ ইন্দ্রিয় ব্যবহার করে। অর্থ্যাৎ, চোখ, কান, নাক, জিহবা ও ত্বক ব্যবহার করে মানুষ তথ্য নিশ্চিত করে। বাজার নিয়ন্ত্রনেও তথ্য নিশ্চিতকরণের গুরুত্ব অনেক। দুষ্টচক্রের মানুষেরা সবসময় গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে সত্যকে পরিবর্তন করতে চায় বা কোন কিছুর মূল্য বৃদ্ধি করতে চায়। আবার অনেক সময় ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতায় কোন প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করতেও মিডিয়ার মাধ্যমে গুজব সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু যখন তথ্য নিশ্চিত করার জন্য তদন্ত করা হয়, তখনই আসল সত্য বেরিয়ে আসে। আর এ জন্যই প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে তথ্য নিশ্চিত করার জন্য ক্রস চেকিংয়ের ব্যবস্থা থাকে। ক্রস চেকিং এর মাধ্যমে একই তথ্য নেয়া হয় বিভিন্ন ব্যক্তির বা চ্যানেলের মাধ্যমে। ফলে তথ্য সুনিশ্চিত হয়। সুযোগ পেলে প্রায়ই দেখা যায় প্রতিষ্ঠানের প্রধান ব্যক্তির আশেপাশে তোষামদকারীদের ভিড় লেগে যায় যারা নিজের স্বার্থে ভুল তথ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে দিকভ্রান্ত করতে চায়। এক্ষেত্রে তথ্য নিশ্চিতকরা জরুরী। আরও একটি উদাহরনের দিকে লক্ষ্য করতে পারি। ইসলামী ব্যংকিংয়ে বন্দককৃত সম্পত্তির (Mortgage Property) প্রকৃত মূল্য জানার জন্য প্রথমে কাছের একটি ব্রাঞ্চ থেকে লোক যায়। দ্বিতীয়ত, কাছাকছি অন্য একটি ব্রাঞ্চ থেকে লোক যায়। তৃতীয়ত, ব্যংকের বাইরের তৃতীয় কোন পক্ষ দিয়ে ঐ বন্দককৃত সম্পত্তির প্রকৃত মূল্য জানার জন্য লোক পাঠানো হয়। তাছাড়াও, যে কোন প্রতিষ্ঠানের কাস্টমার-কমপ্লেইন-বক্স থেকে প্রাপ্ত কোন অভিযোগ আমলে নেয়ার আগে কিংবা তদন্তে লোক পাঠানোর আগে সে বিষয়ে প্রাথমিকভাবে তথ্য নিশ্চিতকরা জরুরী। তথ্য নিশ্চিতকরা না হলে অসহায় ব্যক্তি সাজা প্রাপ্ত হয়ে যেতে পারে। কোরআনেও এ বিষয় (১৭:৩৬) উল্লেখ করা হয়েছে।
وَلَا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ إِنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا (36)
অর্থঃ যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নাই (অযথা) তার পেছনে পড়ো না, কেননা (কিয়ামতের দিন) কান, চোখ ও অন্তর, এ সব কয়টির (ব্যবহার) সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞেস করা হবে।
You shall not accept any information, unless you verify it for yourself. I have given you the hearing, the eyesight, and the brain, and you are responsible for using them.
অর্থ্যাৎ, কোন বিষয়ে নিশ্চিত না হয়ে অনুসরণ করা যাবে না। অন্য একটি আয়াতে আরও (৪৯:০৬) উল্লেখ করা হয়েছে।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا إِنْ جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَأٍ فَتَبَيَّنُوا أَنْ تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَى مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ (6)
অর্থঃ হে ঈমানদার ব্যক্তিরা, যদি কোন দুষ্টু প্রকৃতির লোক তোমাদের কাছে কোন তথ্য নিয়ে আসে, তবে তোমরা (তার সত্যতা) পরখ করে দেখবে, (কখনও যেন আবার এমন না হয়) না জেনে তোমরা কোন একটি সম্প্রদায়ের ক্ষতি করে ফেললে…
O you who believe, if a disobedient (person) comes to you with a news, so investigate, lest you harm a people in ignorance, then you become regretful over what you have done.
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে তথ্য যাচাই না করার ক্ষতিকর দিকগুলোর উপর গবেষনা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।