গুহাবাসী লোকেরা (আসহাবে কাহফ)
أَمْ حَسِبْتَ أَنَّ أَصْحَابَ الْكَهْفِ وَالرَّقِيمِ كَانُوا مِنْ آَيَاتِنَا عَجَبًا (9)
ثُمَّ بَعَثْنَاهُمْ لِنَعْلَمَ أَيُّ الْحِزْبَيْنِ أَحْصَى لِمَا لَبِثُوا أَمَدًا (12)
سَيَقُولُونَ ثَلَاثَةٌ رَابِعُهُمْ كَلْبُهُمْ وَيَقُولُونَ خَمْسَةٌ سَادِسُهُمْ كَلْبُهُمْ رَجْمًا بِالْغَيْبِ وَيَقُولُونَ سَبْعَةٌ وَثَامِنُهُمْ كَلْبُهُمْ قُلْ رَبِّي أَعْلَمُ بِعِدَّتِهِمْ مَا يَعْلَمُهُمْ إِلَّا قَلِيلٌ فَلَا تُمَارِ فِيهِمْ إِلَّا مِرَاءً ظَاهِرًا وَلَا تَسْتَفْتِ فِيهِمْ مِنْهُمْ أَحَدًا (22)
তুমি কি মনে করেছ যে, গুহা ও রকিমের অধিবাসীরা ছিল আমার আয়াতসমূহের এক বিস্ময়? যখন যুবকরা গুহায় আশ্রয় নিল, অতঃপর বলল, ‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে আপনার পক্ষ থেকে রহমত দিন এবং আমাদের জন্য আমাদের কর্মকান্ড সঠিক করে দিন।’ ফলে আমি গুহায় তাদের কান বন্ধ করে দিলাম অনেক বছরের জন্য। বিতর্ককারীরা বলবে, ‘তারা ছিল তিনজন, চতুর্থ হল তাদের কুকুর।’ আর কতক বলবে, ‘তারা ছিল পাঁচজন, ষষ্ঠ হল তাদের কুকুর।’ এসবই অজানা বিষয়ে অনুমান করে। আর কেউ কেউ বলবে, ‘তারা ছিল সাতজন; অষ্টম হল তাদের কুকুর। (কাহফ, ১৮ : ০৯,১২,২২)
কুরআন মাজিদের টিকাকারদের মতে, এই আয়াতে একদল যুবকের কথা উল্লিখিত হয়েছে, যারা এক রোমান রাজার উৎপীড়ন থেকে নিজেদের ঈমান ও জীবন রক্ষার জন্য পাহাড়ের একটি গর্তে আশ্রয় নিয়েছিল। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে গুহার ভেতর প্রায় তিনশ বছর ঘুমিয়ে রেখেছিলেন। যখন তারা ঘুম থেকে জাগ্রত হল, তাদের একজন সাথীকে একটি মুদ্রা দিয়ে খাবার কিনে আনার জন্য পাঠাল। যখন সে শহরে প্রবেশ করল, দেখতে পেল পুরো শহর সম্পূর্ণরূপে বদলে গেছে। দোকানী এত প্রাচীন মুদ্রা দেখে হতবিহবল হয়ে গেল। সে মনে করল, এই যুবক কোনো ধরনের ধনভান্ডারের সন্ধান পেয়েছে এবং সে এই মুদ্রার উৎস সম্পর্কে জানতে চাইল। যুবকটি এমন বিপত্তির মুখে পড়ে আরও অধিক বিস্মিত হল। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত রাজ দরবার পর্যন্ত গড়াল। রাজা যুবকটির কাহিনী শুনে বিস্মিত হলেন। অতঃপর তার সভাসদদের সঙ্গে নিয়ে সেই গুহার কাছে গেলেন এবং যুবকদেরকে তাদের জন্য দুআ করতে বললেন। পরবর্তীতে তারা সেই একই গুহার মধ্যেই বসবাস করতে লাগল এবং মৃত্যু বরণ করল।
অধিকাংশ লোক একটি গুহাকে আসহাবে কাহফের গুহা বলে ধারণা করে থাকে। এটি রাজধানী শহর আম্মানের বহিরপার্শ্বে অবস্থিত। পুরো এলাকাটি খুব এবড়ো-থেবড়ো, পিঙ্গলবর্ণ পাহাড়ময়। একটি পাহাড়ের নিচে চাপা পড়ে আছে একটি সুপ্ত গুহা, যার রয়েছে একটি বড় কক্ষ। আমি কক্ষটিতে প্রবেশ করলাম। পাথরে খোদিত সাতটি গর্ত দেখতে পেলাম। প্রতিটি গর্তের ভেতর একটি করে প্রকোষ্ঠ, যাতে একেকটি মানব কঙ্কাল। সেখানে অন্য একটি গর্ত আছে, যাতে আছে কুকুরের কঙ্কাল।
উল্লেখ্য যে, এসব লোকের ব্যাপারে ন্যূনতম জ্ঞান অর্জন কিংবা জানার জন্য মুহাম্মদ সা.-এর কাছে কোনো মাধ্যম কিংবা উৎস ছিল না এবং বাস্তবতা হল, তা এখনো মাটির নিচে একটি গুহায় চাপা পড়ে আছে। এটি কুরআনের মুজিজা যে, তা ঐতিহাসিকদের বর্ণনা বা নৃবিজ্ঞানীদের আবিষ্কারের শত শত বছর পূর্বের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে।