সুরা আহযাব আয়াত ০৪ (Surah Ahjab, ayat 04)
কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, যদি কোরআন আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও নিকট থেকে আসত তাহলে এতে অনেক অসংগতি থাকত। অথচ কোরআনে একটিও ভুল নেই। আর আল্লাহ্ চ্যলেঞ্জ করেছেন, কারও পক্ষেই কোরআন থেকে একটি মাত্র ভুলও বের করা সম্ভব হবেনা। কোরআন যে একদম নির্ভুল তার একটি উদাহরণ সম্পর্কেই এই আলোচনা। সুরা আহযাবের (৩৩:০৪) নম্বর আয়াতের দিকে লক্ষ্য করি,
مَا جَعَلَ اللَّهُ لِرَجُلٍ مِنْ قَلْبَيْنِ فِي جَوْفِهِ وَمَا جَعَلَ أَزْوَاجَكُمُ اللَّائِي تُظَاهِرُونَ مِنْهُنَّ أُمَّهَاتِكُمْ وَمَا جَعَلَ أَدْعِيَاءَكُمْ أَبْنَاءَكُمْ ذَلِكُمْ قَوْلُكُمْ بِأَفْوَاهِكُمْ وَاللَّهُ يَقُولُ الْحَقَّ وَهُوَ يَهْدِي السَّبِيلَ (4)
অর্থঃ (হে মানুষ,) আল্লাহ্ তায়ালা কোন পুরুষের জন্যে তার শরীরে দুটো অন্তর ( বা হৃৎপিণ্ড) পয়দা করেননি…
উপরের আয়াতে দুটো শব্দ কি নিখুঁত ভাবে ব্যবহৃত হয়েছে তা ভাবলে অবাক হতে হয়।
لِرَجُلٍ – প্রথমত, কোরআনের এই আয়াতে পুরুষের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগে, এখানে لِرَجُلٍ বা পুরুষ শব্দটি ব্যবহৃত না হয়ে বরং নারী বা মানুষ শব্দটিও ব্যবহৃত হতে পারত? কিন্তু তা হয়নি কেন? নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে। কারণ, পুরুষের শরীরে দুটো হৃৎপিণ্ড হবার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু গর্ভবতী নারীর শরীরে দুটো হৃৎপিণ্ড থাকতে পারে। একটি হল নারীর আর অন্যটি হল তার সন্তানের। আর এজন্যই এই আয়াতে নারী শব্দটি ব্যবহার না করে পুরুষ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। উপরের আয়াতটির প্রথম অংশে পুরুষের কথা আলোচনা করা হলেও বাকী অংশে নারীদের কথা আলোচনা করা হয়েছে। আর এজন্যই নারীদের কথা পাঠকের ভাবনায় আসতেই পারে। আর এজন্যই নারী বা মানুষ শব্দটিও ব্যবহৃত না হয়ে এখানে পুরুষে শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।
جَوْفِهِ – দ্বিতীয়ত, কোরআনের এই আয়াতে শরীরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগে, এখানে جَوْفِهِ বা ‘শরীর’ শব্দটি ব্যবহৃত না হয়ে বরং ‘বুক’ শব্দটিও ব্যবহৃত হতে পারত? কিন্তু তা হয়নি কেন? নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে। কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় ‘হৃৎপিণ্ড’ বোঝাতে গিয়ে আরবিতে ‘সুদুর’ বা বুক শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু এই আয়াতে ব্যবহৃত হয়েছে جَوْفِهِ যা দ্বারা শুধুমাত্র বুক বোঝায়না বরং সম্পুর্ন শরীরকে বোঝায়। جَوْفِهِ দ্বারা শুধুমাত্র বুককে নির্দিষ্ট করা হয়নি বরং সম্পুর্ন শরীরকে বোঝানো হয়েছে। আর এখানে বুক বোঝালে সঠিক হবেনা বরং সম্পুর্ন শরীরকে বোঝালেই সঠিক হবে। কারণ, পুরুষের বুকে দুটো হৃৎপিণ্ড হবার কোন সুযোগ নেই। আর, উপরের আয়াতটির প্রথম অংশে পুরুষের কথা আলোচনা করা হলেও বাকী অংশে নারীদের কথা আলোচনা করা হয়েছে। আর এজন্যই নারীদের কথা পাঠকের ভাবনায় আসতেই পারে। । আর গর্ভবতী নারীর শরীরে দুটো হৃৎপিণ্ড থাকতে পারে। একটি হল নারীর আর অন্যটি হল তার সন্তানের। নারীর হৃৎপিণ্ড থাকবে বুকে আর সন্তানেরটি থাকবে পেটে। আর এজন্যই এখানে ‘বুক’ শব্দটি ব্যবহৃত না হয়ে ‘শরীর’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে এবং এটাই সঠিক।