সূরা সোয়াদ এর অলৌকিকত্বঃ
- প্রথমেই চলুন সুরা আল ফাতিহার দিকে লক্ষ্য করি। এই সুরায় ‘সোয়াদ’ অক্ষরটি প্রথম এসেছে ৮৮ তম অক্ষরে।
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (1)
الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ (2) الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (3) مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ (4) إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ (5) اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ (6) صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ (7)
এবার চলুন লক্ষ্য করি, কোরআনের ৩৮ তম সুরা ‘সোয়াদ’ এবং ২৮ তম সুরা ‘কাসাস’ এর দিকে। ‘সোয়াদ’ সুরার নামে ‘সোয়াদ’ অক্ষরটি এসেছে একবার। আর ‘কাসাস’ সুরার নামে ‘সোয়াদ’ অক্ষরটি এসেছে দুইবার। কিন্তু উভয় সুরাতেই আয়াতের সংখ্যা হল ৮৮ আর এজন্যই আমরা এ সুরায় ৮৮ সংখ্যাটির অলৌকিকত্ব খুঁজব।
- এবার চলুন (সুরা নিসা ০৪-১২) নং আয়াতের দিকে লক্ষ্য করি। এই আয়াতের বিশেষত্ব হল এটাই কোরআনের একমাত্র আয়াত যেখানে ৮৮ টি শব্দ আছে।
وَلَكُمْ نِصْفُ مَا تَرَكَ أَزْوَاجُكُمْ إِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُنَّ وَلَدٌ فَإِنْ كَانَ لَهُنَّ وَلَدٌ فَلَكُمُ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْنَ مِنْ بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصِينَ بِهَا أَوْ دَيْنٍ وَلَهُنَّ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْتُمْ إِنْ لَمْ يَكُنْ لَكُمْ وَلَدٌ فَإِنْ كَانَ لَكُمْ وَلَدٌ فَلَهُنَّ الثُّمُنُ مِمَّا تَرَكْتُمْ مِنْ بَعْدِ وَصِيَّةٍ تُوصُونَ بِهَا أَوْ دَيْنٍ وَإِنْ كَانَ رَجُلٌ يُورَثُ كَلَالَةً أَوِ امْرَأَةٌ وَلَهُ أَخٌ أَوْ أُخْتٌ فَلِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا السُّدُسُ فَإِنْ كَانُوا أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ فَهُمْ شُرَكَاءُ فِي الثُّلُثِ مِنْ بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصَى بِهَا أَوْ دَيْنٍ غَيْرَ مُضَارٍّ وَصِيَّةً مِنَ اللَّهِ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَلِيمٌ (12)
এই সুরা নিসায় আয়াতও আছে ১৭৬ টি যা ৮৮ এর দ্বিগুণ। উপরন্তু, এই সুরার ৮৮ তম আয়াতে অক্ষরও আছে ৮৮টি। উপরন্তু, এই ৮৮ তম আয়াতে শব্দ আছে ২২ টি এবং ৮৮ = ২২ X ৪ আর ৪ হল সুরা নিসার ক্রম।
- আমরা সুরা সোয়াদের (৩৮ তম সুরা) সাথে সুরা নিসার (০৪:১২) নং আয়াতের মধ্যে গানিতিক সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছিলাম। এখন আমরা ১২ এর সাথে কোরআনের অন্য কোন আয়াতের সম্পর্ক আছে কিনা তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করব। এবার আসুন আমরা নিচের দুইটি আয়াতের দিকে লক্ষ্য করি। আয়াত দুইটি হল সুরা আল মায়েদার (০৫:৮৮) নং আয়াত এবং সুরা তোয়া-হা এর (২০:৮৮) নং আয়াত। অবাক হবার বিষয় হল উভয় আয়াতেই ১২ টি করে শব্দ আছে।
সুরা আল মায়েদার (০৫:৮৮) নং আয়াতে ১২ টি শব্দ আছে।
وَكُلُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ حَلَالًا طَيِّبًا وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي أَنْتُمْ بِهِ مُؤْمِنُونَ (88)
আবার, সুরা তোয়া-হা এর (২০:৮৮) নং আয়াতেও ১২ টি শব্দ আছে।
فَأَخْرَجَ لَهُمْ عِجْلًا جَسَدًا لَهُ خُوَارٌ فَقَالُوا هَذَا إِلَهُكُمْ وَإِلَهُ مُوسَى فَنَسِيَ (88)
এবং এই দুইটি আয়াত মিলে মোট ১০০ টি অক্ষর আছে। ১০০ কে ভাঙলে আমরা পাই, ১০০ = ৮৮+১২ অর্থ্যাৎ, আবার ঘুরে ফিরে আমরা ৮৮ পেলাম যার সাথে ‘সোয়াদ’ এর সম্পর্ক আছে। আর ১২ এর সাথে মিল পাই সুরা নিসার (০৪:১২) নং আয়াতের।
- যেহেতু বারবার ৮৮ পাওয়া যাচ্ছে সেহেতু চলুন ৮৮ তম সুরা গাসিয়ায় অনুসন্ধান করি। এই সুরার তৃতীয় আয়াতে প্রথম ‘সোয়াদ’ অক্ষরটি আসে।
هَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ الْغَاشِيَةِ (1) وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ خَاشِعَةٌ (2) عَامِلَةٌ نَاصِبَةٌ (3)
উপরের তৃতীয় আয়াতে যে ‘সোয়াদ’ পাওয়া গেছে তা কোরআনের শুরু থেকে গুনে আসলে ২০২৪ তম ‘সোয়াদ’ হয়। আর ২০২৪ = ৮৮ X ২৩ এখানেও ৮৮ যার সাথে সোয়াদের সম্পর্ক আছে। কিন্তু মনে প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে ২৩ এর অর্থ কি? ২৩ সংখ্যাটিও ‘সোয়াদ’ এর সাথে সম্পর্কিত।
‘সোয়াদ’ অক্ষরটিকে যদি একটি শব্দ মনে করি তাহলে উচ্চারণ করতে গেলে তিনটি অক্ষর প্রয়োজন হয়। ‘সোয়াদ’, ‘আলিফ’ এবং ‘দাল’। আরবী ভাষায় এদের মান যথাক্রমে ‘সোয়াদ’= ১৪, ‘আলিফ’= ১ এবং ‘দাল’= ৮। এদের যোগফল, ১৪+১+৮ = ২৩ অর্থ্যাত, ২৩ হল ‘সোয়াদ’ নিজেই।