সূরা আল কদরের অলৌকিকত্বঃ

Surah Al Qadar

সূরা আল কদরের অলৌকিকত্বঃ

সূরা আল কদরে পাঁচটি আয়াত আছে এবং এটি কোরআনের ৯৭ তম সূরা। লাইলাতুল কদরের রাতের কথা আমরা সবাই জানি। আমরা মুসলিমরা এ রাতে আমাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সারা রাত আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি। আর এই লাইলাতুল কদরের রাতই হল এই সুরার প্রধান আলোচ্য বিষয়। বিভিন্ন হাদীস অনুযায়ী আমরা জানতে পেরেছি যে, এই রাতকে রমজান মাসের শেষ দশকে পাওয়া যাবে। অন্য একটি হাদীস থেকে পাওয়া যায়, এই রাতকে রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোর মধ্যে পাওয়া যাবে। আরও গবেষণা করে জানা যায়, রমজান মাসের শেষ দশকের ২৭ তম রাতটিই হল কদরের রাত। আজকে আমরা এই গবেষণা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব। প্রশ্ন হল ২৭ তম রাতকেই কেন কদরের রাত বলা হল? আসুন সুরাটির দিকে লক্ষ্য করি।

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ (1) وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ (2) لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ (3) تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِمْ مِنْ كُلِّ أَمْرٍ (4) سَلَامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ الْفَجْرِ (5)

  1. এই সুরায় لَيْلَةِ الْقَدْرِ শব্দটি তিনবার এসেছে যার অর্থ কদরের রাত। আর لَيْلَةِ الْقَدْرِ শব্দের মধ্যে নয়টি অক্ষর আছে। এদের গুনফল হল ২৭ = ৩ X ৯ আর এ থেকেই কোরআন বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন যে, ২৭ তম রাতটিই লাইলাতুল কদরের রাত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
  2. এবার আসুন সুরাটির প্রথম আয়াতের দিকে আবার লক্ষ্য করি। এখানে لَيْلَةِ শব্দটি এসেছে যার অর্থ হল রাত। এক মাস হল তিরিশ দিন আর এই সুরায় তিরিশটি শব্দ আছে। শেষ থেকে গুনে গুনে যদি আমরা এই সুরার শুরুর দিকে আসতে থাকি তাহলে আমরা দেখতে পাব ২৭ তম শব্দটিই হল ‘রাত’। এ থেকেই কোরআন বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন যে, ২৭ তম রাতটিই লাইলাতুল কদরের রাত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
  3. এবার আসুন শুরু থেকে শব্দ গুনে গুনে শেষের দিকে যাই। তাহলে আমরা ২৭ তম শব্দটি পাব هِيَ যার অর্থ হল ‘ঐ’ এবং এই ‘ঐ’ দ্বারা কদরের রাতকেই নির্দেশ করা হচ্ছে। এ থেকেই কোরআন বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন যে, ২৭ তম রাতটিই লাইলাতুল কদরের রাত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
  4. আপনারা অনেকেই জানেন, আরবি ভাষায় প্রতিটি অক্ষরের আলাদা আলাদা মান আছে। এবার هِيَ শব্দটির দিকে লক্ষ্য করুন। ه এর মান ২৬ এবং ي এর মান হল ২৮ আর هِيَ দিয়ে যে রাতটিকে বুঝানো হচ্ছে তা হল এদের মধ্যবর্তী ২৭ তম রাত।
  5. এবার আসুন এই সুরার প্রথম শব্দের দিকে। প্রথম শব্দটি হল إِنَّا আর إِنَّا শব্দটিতে আছে আলিফ, নুন এবং আলিফ। আপনারা অনেকেই জানেন, আরবি ভাষায় প্রতিটি অক্ষরের আলাদা আলাদা মান আছে। আরবি ভাষায়, আলিফ = ১, নুন = ২৫, আলিফ = ১ এবং এদের যোগফল থেকে আমরা পাই, ১+২৫+১ = ২৭

আরও অনেকগুলো যুক্তি আছে ২৭ তম রাতটি কদরের রাত হবার পক্ষে। তবে সহজগুলোই সাধারণ পাঠকদের জন্য উল্লেখ করলাম।

যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি একজন গনিতবিদ ছিলেন, যিনি ওহী বর্ননার সময় এত সতর্ক ছিলেন যে,  সূরা আল কদরের মধ্যে ২৭ এর গানিতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছেন, অথচ ইতিহাস বলে তিনি পড়তেও জানতেন না এবং লিখতেও জানতেন না? যেখানে একজন শিক্ষিত মানুষের পক্ষেই এরকম সূরা তৈরী সম্ভব নয় সেখানে আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর আগে রাসুল (সঃ) কিভাবে এই কোরআনের সূরা রচনা করবেন অথচ তিনি লিখতেও জানতেন না এবং পড়তেও জানতেন না? নাউযুবিল্লাহ কোরআন আল্লাহর বানী।

Author: moq@2020@

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *