সাম্যতার নীতি (Equivalence Principal)
সাম্যতার নীতি এমন একটি বৈশিষ্ট্য যা আইনেস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্বের একটি মুল ভিত্তি। সাম্যতার নীতি অনুযায়ী, কোন ব্যক্তির ওজন (অথবা অভিকর্ষজ ত্বরণের সঙ্গে সম্পর্কিত যে কোন বিষয়) যদি পৃথিবীতে অভিকর্ষজ ত্বরণের মাধ্যমে মাপা হয় এবং ঐ একই ব্যক্তির ওজন (অথবা অভিকর্ষজ ত্বরণের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐ একই বিষয়) যদি কৃত্রিমভাবে ত্বরণ সৃষ্টির মাধ্যমে মহাশূ্ন্যের রকেটে মাপা হয়, তাহলে উভয়ক্ষেত্রে তাদের আলাদা করা যাবেনা।
সাম্যতার নীতি থেকে আমরা জানতে পারি, একই ব্যক্তি যদি পৃথিবীর অভিকর্ষজ ত্বরণের মধ্যে থাকে এবং রকেটের মধ্যে থাকে তাহলে উভয় জায়গাতেই তার ভর একই থাকবে। এজন্য পৃথিবীতে ওজনের ধারনা (মধ্যাকর্ষন জনিত ওজন) এবং মহাকাশে (রকেটের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট ত্বরনের ওজন) ওজনের ধারনা আলাদা করা যায়না। কিন্তু শূন্য মধ্যাকর্ষনে বা জিরো গ্রাভিটিতে এই কথা সত্য হবেনা। শূন্য মধ্যাকর্ষনে বা গ্রাভিটিতে কোন বস্তু রাখলে তা নড়াচড়া করেনা, যেমন রাখা হয় ঠিক তেমনি থাকে। আমরা মাটির উপর দাড়াতে পারি কারণ অভিকর্ষজ ত্বরণ আমাদের নিচের দিকে আকর্ষন করে। শূন্য গ্রাভিটিতে মানুষ কোন কিছুর উপর দাড়াতে পারেনা। মহাশূন্যে যদি রকেটের ইঞ্জিন বন্ধ থাকে, তাহলে নভোচারীর কাছে নিজেকে ওজনহীন মনে হয়। কিন্তু যখনই আবার রকেট চলা শুরু হয়, নভোচারী আবার ওজন অনুভব করে। তখন নভোচারীর কাছে মনে হয়, সে পৃথিবীতে দাড়িয়ে আছে। কোরআনে (৫৫:৭) এ বিষয়ে পরোক্ষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
٧ وَالسَّمَاءَ رَفَعَهَا وَوَضَعَ الْمِيزَانَ
অর্থঃ আসমান-তাকে তিনি সমুন্নত রেখেছেন আর স্থাপন করেছেন (ন্যায়ের) মানদন্ড।
And the sky, He raised; and He set up the balance.
উপরের আয়াতে ‘আসমানের’ কথা বলা হচ্ছে এবং পরবর্তীতে ‘মানদণ্ডের’ কথা বলা হচ্ছে যা পৃথিবীর মাঝেই পাওয়া যায়। একই আয়াতে আকাশের বিষয় ও পৃথিবীর মানদণ্ডের কথা বলার কারণ কি? এর কারণ হল ভরের ভারসাম্যতা বা মাস ব্যলেন্স। এবং এই কারনেই মানুষ পৃথিবীর উপর দাড়াতে পারে এবং ওজন অনুভব করে, চলন্ত রকেটের উপরও দাড়াতে পারে এবং ওজন অনুভব করে। কিন্তু পৃথিবীর বাইরে স্থির রকেটের উপর দাড়াতে পারেনা এবং ওজনহীন অনুভব করে। আর এই ভারসাম্যতা রক্ষার বিষয়টি কেবল দুইটি ভাবে তৈরী হয়। মধ্যাকর্ষন ত্বরনের মাধ্যমে (পৃথিবীতে) এবং পৃথিবীর বাইরে কৃত্রিম ত্বরন সৃষ্টির মাধ্যমে (রকেটে)।
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন তাদের কাছে প্রশ্ন তিনি কিভাবে জানলেন ওজনের (ভরের) ভারসাম্যতা কেবল দুইভাবে হয়, অভিকর্ষজ ত্বরনের মাধ্যমে(প্রাকৃতিক ত্বরণ) এবং কৃত্রিম ত্বরনের মাধ্যমে(রকেটের ত্বরণ)? তিনি কি এ বিষয়েরউপর গবেষণা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছিলেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।