দান ও সদাকা (Donation)

Donation

দান ও সদাকা (Donation)

ইসলামে দান করাকে উৎসাহিত করা হয়েছে। যাকাত দিলে সম্পদ পবিত্র হয়। যাকাত প্রদান করা ফরজ বিষয়। অর্থ্যাৎ, অবশ্যই পালন করতে হবে। যাকাত ছাড়াও দান ও সদাকা করতে ইসলাম উৎসাহ প্রদান করে। নিজের পরিবারের জন্য যা কিছু খরচ করা হয় তাও সদাকা হিসেবে আল্লাহ গ্রহণ করেন। প্রকাশ্য দানে প্রচুর সওয়াব। দান আখিরাতে অকাট্য দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে। আর গোপন দান আল্লাহর রাগকে কমাতে থাকে। তবে সুদের অর্থ দিয়ে যাকাত, দান বা সদকা যাই করা হোক – তা আল্লাহর কাছে গ্রহনযোগ্য হবেনা। এগুলো হল দানের পরলৌকিক প্রাপ্তি। কোরআনে এ বিষয়ে একটি আয়াত (০২:২৭৪) আছে,

الَّذِينَ يُنْفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ سِرًّا وَعَلَانِيَةً فَلَهُمْ أَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ (274)

অর্থঃ যারা দিন রাত প্রকাশ্যে ও সংগোপনে নিজেদের মালসম্পদ ব্যয় করে, তাদের মালিকের দরবারে তাদের এ দানের প্রতিফল (সুরক্ষিত) রয়েছে, তাদের উপর কোন রকম ভয়ভীতি থাকবেনা, তারা সেদিন চিন্তিতও হবেনা।

Those who spend their wealth in path of Allah during day and night, secretly or publicly, they will be rewarded by their lord.

কিন্তু অবিশ্বাসীরা সাধারণত দানের পার্থিব প্রাপ্তিগুলোর দিকেই বেশি মনোযোগী হয়। দানের পার্থিব উপকারিতাও আছে।

১. দানের ফলে দানকারী ব্যক্তির মনে প্রশান্তি নেমে আসে।

২. ব্যক্তি বা ব্যবসার সুনাম বৃদ্ধি পায়।

৩. কেন্দ্রীভূত সম্পদ সমাজে সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ে।

৪. দানের অর্থ দিয়ে গরীব মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।

অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন সুদী প্রতিষ্ঠান সুদের টাকা দিয়ে কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (CSR) এর দায়িত্ব পালন করে থাকে। অর্থ্যাৎ, সমাজের দরিদ্রদের সাহায্য করে থাকে। কিন্তু সুদের টাকা হলে তা আল্লাহর নিকট কবুল হবেনা। ইসলামী অর্থ ব্যবস্থায় MGM মডেলের কথা অনেকেই শুনে থাকবেন। এই মডেলের মুল বক্তব্য হল- অর্থ রূপান্তরিত হয়ে পণ্যে এবং পণ্য রূপান্তরিত হয়ে আবার অর্থে পরিণত হবে। কিন্তু এর বাইরে টাকা কখনই জীবের ন্যায় আচরণ করতে পারবেনা। অর্থ্যাৎ, অর্থ নতুন কোন অর্থের জন্ম দিতে পারবেনা। ব্যবসা ছাড়া বা পণ্য বেচাকেনা ছাড়া কোন নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ নতুন অর্থের জন্ম দিলেই তা সুদ। সুতরাং, একটি দেশের মোট অর্থের পরিমান যেমন নির্দিষ্ট, ঠিক তেমনি ঐ দেশের সম্পদও নির্দিষ্ট। সম্পদ কারণ ছাড়া বাড়তে পারে কিন্তু অর্থ সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া বাড়তে পারেনা। নতুন করে কোন দেশের সেন্ট্রাল ব্যাংক ফান্ড সৃষ্টি করলে বা নতুন নোট বাজারে ছাড়লে অথবা ঋণ অবলোকন করলে বা বাজার থেকে নোট তুলে নিলে সেই সিদ্ধান্তের ফল প্রতিটি নাগরিকের উপর সমান ভাবে বর্তাবে এবং সেই অর্থে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার সমান হবে। এবং তা কেবলমাত্র জনকল্যাণে ব্যবহার করা যাবে যার দায়িত্ব বর্তায় ঐ দেশের নির্বাচিত সরকারের উপর। সুতরাং, যাকাত, দান এবং সদাকা সুদমুক্ত হতে হবে।

যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি ঐ আমলের অর্থনীতিবিদ ছিলেন যিনি সামাজিক অর্থব্যবস্থার উপর গবেষনা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছেন? নাউযুবিল্লাহ কোরআন আল্লাহর বানী।

 

Author: moq@2020@

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *