গ্রাভিটেশনাল লেন্সিং (Gravitational Lensing)
মহাকাশ গবেষকরা সম্প্রতি অদৃশ্য ডার্কমেটারের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন। ডার্কমেটারকে দেখা যায়না কিন্তু এই ডার্কমেটারের মাধ্যমেই এমন শক্তিশালী মধ্যাকর্ষণ বল তৈরী হয় যা ছায়াপথের অসংখ্য গ্রহ নক্ষত্রকে কোন কিছুর সাহায্য ছাড়াই ঝুলিয়ে রেখেছে মহাশূন্যে। ডার্কমেটারের ভর আমাদের দৃশ্যমান বস্তুজগত থেকে আলাদা। ডার্কমেটারের বস্তু দিয়ে কোন কিছুকে আঘাত বা সংঘর্ষ করা যায়না। কিন্তু এর মধ্যাকর্ষণ বল ঠিকই অনুভব করা যায়।
উপরের চিত্রে দুইটি ভিন্ন ডার্ক মেটারের ক্লাসটার বিপরীত দিক থেকে ছুটে এসে একত্রে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। কিন্তু তাদের মধ্যে দৃশ্যমান কোন সংঘর্ষ হয়নি বরং তাদের একটি অন্যটির ভিতর দিয়ে অনায়াসে চলে যেতে পারে। উভয় ক্লাসটারই হাইড্রোজেন সহ একে অন্যের দিকে ছুটে এসে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল। উভয় ক্লাস্টারের ডার্কমেটারের মধ্যে কোন সংঘর্ষ না হলেও তাদের বহন করা হাইড্রোজেন এর মধ্যে ঠিকই সংঘর্ষ হয়েছিল।
আর এ বিষয়ে আজ থেকে প্রায় ১৪৫০ বছর আগেই কোরআনে মহাকাশের বড় বড় নক্ষত্রের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যারা অদৃশ্য এবং এসকল বড় বড় নক্ষত্র নিয়ে আল্লাহ শপথ করেছেন। কোরআনে (৮১:১৫-১৬) নং আয়াতে এ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
١٦ الْجَوَارِ الْكُنَّسِ ١٥ فَلَا أُقْسِمُ بِالْخُنَّسِ
অর্থঃ শপথ সেসব তারকাপুঞ্জের যা (চলতে চলতে) গা ঢাকা দেয়। (আবার) যা (মাঝে মাঝে) অদৃশ্য হয়ে যায়।
I swear by those that are invisible (Khunnas خنس), that move, that sweep.
ডার্কমেটার এক ধরণের অদৃশ্য বস্তু যা চলতে পারে এবং চলার সময় হাইড্রোজেন বহন করে নিয়ে চলে।
আপেক্ষিকতার সুত্রগুলো থেকে আমরা জানতে পারি, মহাকাশে বিশাল ভরের কোন নক্ষত্র বা ছায়াপথের কারণে এত শক্তিশালী আকর্ষন বল তৈরী হয় যে তা আলোকে টেনে নিজের দিকে নিয়ে আসে। ফলে আলোর গতিপথ বেকে গিয়ে দিক পরিবর্তিত হয়ে যায়। ডার্কমেটার থেকে আলো বের হয়না কিন্তু মধ্যাকর্ষণ-জনিত-লেন্সিং এর মাধ্যমে এর অস্তিত্ব অনুভব করা যায়। আলো কোন জায়গায় কতটুকু বেকেছে তা নির্নয় করতে পারলেই তার পেছনে থাকা আলোর উৎস বা ছায়াপথের দুরত্ব সম্পর্কে ধারণা করা যায়। আসুন এ সম্পর্কিত কোরআনের আয়াতটি (৬৭:৩-৪) লক্ষ্য করি।
٤ ثُمَّ ارْجِعِ الْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنْقَلِبْ إِلَيْكَ الْبَصَرُ خَاسِئًا وَهُوَ حَسِيرٌ ٣ الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا ۖ مَا تَرَىٰ فِي خَلْقِ الرَّحْمَٰنِ مِنْ تَفَاوُتٍ ۖ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرَىٰ مِنْ فُطُورٍ
অর্থঃ তিনিই সাত মজবুত আসমান বানিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে একটার উপর আর একটা স্থাপন করেছেন। অসীম দয়ালু আল্লাহ তায়ালার এ নিপুন সৃষ্টির কোথাও কোন খুঁত তুমি দেখতে পাবেনা, আবার তাকিয়ে দেখো তো, কোথাও কি তুমি কোন রকম ফাটল দেখতে পাও?
[Allah] is the one who created seven superimposed Heavens. You do not see variations in the formations of the Compassionate, so redirect your sight, do you see any creation (فطور)?
উপরের আয়াতে `ফুতূর` অর্থ শুন্য থেকে কিছু সৃষ্টি হওয়া।
কোরাআনে উপরের আয়াতে প্রথমবার তাকাবার পর পুনরায় আবার আকাশের দিকে তাকাতে বলা হচ্ছে। কেন আবার তাকাতে বলা হল? এর কারণ হল প্রথমবার ভুল হতে পারে কিন্তু দ্বিতীয়বার ভুল হবার সম্ভাবনা কমে আসে। আবার, আমরা এখন জানি, ডার্কমেটার আকাশে দেখা যায়না। আপনি প্রথমবার তাকানোর পর দ্বিতীয়বার আবার যদি আকাশের দিকে ফিরে তাকান তবুও ডার্কমেটার দেখতে পাবেন না। আবার অন্যদিকে, মহাকাশে ভারী বস্তুর আকর্ষনে আলোর দিক বেঁকে যায়। ফলে আকাশে আমরা নক্ষত্রগুলোকে যে অবস্থানে দেখি , তা ঐ নক্ষত্রগুলোর আসল অবস্থান নাও হতে পারে।
ডার্কমেটার থেকে আলো বের হয়না। এই জন্য ডার্কমেটারের ভর কত তা নির্নয় করা কঠিন। ডার্কমেটারের ভর নির্নয় করার জন্য বিজ্ঞানীরা একটি কৌশল ব্যবহার করে। কৌশলটি হল বিজ্ঞানীরা ডার্কমেটারের পেছন থেকে আসা নক্ষত্রের আলো কোথায় কত কোণে বেকেছে তা নির্ণয় করার চেষ্টা করে। এই কোণ নির্নয় করার জন্য ডার্কমেটারের পিছনের কোন নক্ষত্র থেকে ছুটে আসা আলোক রশ্মিকে ডার্কমেটারের কয়েকটি দিক (অন্ততঃ দুই দিক) থেকে পরিমাপ করতে হয়। কোরআনে দুইবার আকাশের দিকে তাকাতে বলা হয়েছে। আল্লাহই ভাল জানেন এই আয়াতের মাধ্যমে ডার্ক মেটারকে নির্দেশ করা হয়েছে কিনা। এই কোণ নির্নয় করতে পারলেই ডার্কমেটারের ভর এবং পৃথিবী থেকে তার সম্ভাব্য দুরত্ব কত হতে পারে তা নির্নয় করা যায়।
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছে, তাদের কাছে প্রশ্ন তিনি কিভাবে জানলেন গ্রাভিটেশনাল লেন্সিং এর কথা? তিনি কি এ বিষয়েরউপর গবেষণা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছিলেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।