আয়াতুল কুরসি এবং রিং কাঠামো
আপনারা অনেকেই আয়াতুল কুরসির নাম শুনেছেন। এটি সুরা বাকারার ২৫৫ নম্বর আয়াত। যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, সে মৃত্যুর সাথে সাথেই জান্নাতে প্রবেশ করবে। আয়াতুল কুরসির আর একটি বিশেষত্ব হল এর কাঠামো। এর গঠনের কাঠামোকে রিং-কাঠামো বলে। আয়াতুল কুরসিতে মোট ৯ টি অংশ আছে। এর কাঠামো সম্পর্ক নিন্মরুপঃ
আয়াতের ১ম অংশের সাথে সম্পর্ক রয়েছে = আয়াতের ৯ তম অংশের
আয়াতের ২য় অংশের সাথে সম্পর্ক রয়েছে = আয়াতের ৮ তম অংশের
আয়াতের ৩য় অংশের সাথে সম্পর্ক রয়েছে = আয়াতের ৭ তম অংশের
আয়াতের ৪তম অংশের সাথে সম্পর্ক রয়েছে = আয়াতের ৬ তম অংশের
৫ তম অংশটি হল মধ্যবর্তী অংশ
এবার আসুন আয়াতুল কুরসির উপরের অংশগুলোর মধ্যে মিল খোঁজার চেষ্টা করি।
১ম এবং ৯তম অংশের সম্পর্কঃ প্রথম অংশেও আল্লাহর দুটি নাম। আল হাইয়ূ এবং আল কাইয়ুম। আবার ৯তম আয়াতেও রয়েছে আল্লাহর দুটি নাম। আল আলিয়ু এবং আল আজিম। উভয় অংশেই আল্লাহর দুটি করে নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
২য় এবং ৮ তম আয়াতের অংশের সম্পর্কঃ দ্বিতীয় অংশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঘুম বা তন্দ্রা তাঁকে আচ্ছন্ন করেনা। আবার ৮ তম আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আসমান জমীন হেফাযত করার কাজ তাঁকে ক্লান্ত করে না। উভয় আয়াতেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, আল্লাহকে পরিশ্রম ক্লান্ত করে না।
৩য় এবং ৭ তম অংশের সম্পর্কঃ তৃতীয় অংশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই দুনিয়ার যাবতীয় সম্পদের মালিক হলেন আল্লাহ। আবার ৭ তম আয়াতেও উল্লেখ করা হয়েছে যে, আসমান ও জমিনের সব কিছুর রাজত্ব আল্লাহর এবং তিনিই হলেন মালিক। উভয় আয়াতেই আল্লাহকে ‘মালিক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
৪ তম এবং ৬ তম অংশের সম্পর্কঃ ৪ তম অংশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আল্লাহ অনুমতি ছাড়া কেউ তার দরবারে প্রবেশ করতে পারবেনা। আবার, ৬ তম অংশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আল্লাহর দেয়া ক্ষমতা ছাড়া কেউ কোন জ্ঞান লাভ করতে পারবেনা। উভয় অংশই না বোধক বাক্য দ্বারা শেষ হয়েছে।
৫ তম অংশটি হল মধ্যবর্তী অংশঃ তিনি ভবিষ্যতের বিষয়ও জানেন এবং আবার অতীতের বিষয়ও জানেন। এই মধ্যবর্তী অংশে পরোক্ষভাবে ইংগিত দেয়া আছে, উপরের গানিতিক সম্পর্ক গুলোর। অর্থ্যাৎ, আল্লাহ জানেন যা আছে সামনে এবং যা আছে পেছনে।