সূরা নামলের অলৌকিকত্বঃ
সূরা নামল হল কোরআনের ২৭ তম সূরা এবং এতে ৯৩ টি আয়াত আছে।
- আরবিতে প্রতিটি অক্ষরের আলাদা আলাদা মান আছে। ‘নামল’ শব্দটি সূরা নামলে মাত্র একবার এসেছে। আরবি ভাষায় প্রতিটি অক্ষরের ভিন্ন ভিন্ন মান আছে। এবং নামল শব্দে শুধুমাত্র তিনটি অক্ষর আছে। ‘নুন’, ‘মিম’ এবং লাম। এদের মান যথাক্রমে নিন্মরুপ।
নুন = ৫০
মিম = ৪০
লাম = ৩০
এদের যোগফল = (৫০+৪০+৩০) = ১২০
এবার দেখুন ২৭ এবং ৯৩ এর দিকে। সূরা নামল হল কোরআনের ২৭ তম সূরা এবং এতে ৯৩ টি আয়াত আছে। এদের যোগফল = (২৭+৯৩) = ১২০
- সূরা নামলে ‘আল্লাহ’ শব্দটি মোট ২৭ বার এসেছে এবং ২৭ হল কোরআনের ১১৪ টি সুরার মধ্যে সূরা নামলের ক্রম।
- সূরা নামলের ২৬ নম্বর আয়াতটিই একমাত্র ‘আল্লাহ’ শব্দ দিয়ে শুরু হয়েছে এবং এই আয়াতেও ২৭ টি অক্ষর আছে। আর ২৭ হল এই সুরার ক্রম।
- নামল সুরার ক্রম হল ২৭ আর আরবি অক্ষরগুলোর মধ্যে ২৭ তম অক্ষর হল ‘ওয়া’। সূরা নামলে মোট ৯৩ টি আয়াত বা বাক্য আছে। এর মধ্যে ১৫ টি আয়াতে ‘ওয়া’ ব্যবহৃত হয়েছে একবার করে। আবার অন্য ১৫ টি আয়াতে ‘ওয়া’ ব্যবহৃত হয়েছে দুইবার করে। আবার অন্য ১৫ টি আয়াতে ‘ওয়া’ ব্যবহৃত হয়েছে তিনবার করে। আবার অন্য ১৫ টি আয়াতে ‘ওয়া’ ব্যবহৃত হয়েছে চারবার করে। আবার অন্য ১৫ টি আয়াতে ‘ওয়া’ ব্যবহৃত হয়েছে পাঁচবার করে। অথচ রাসুল লিখতেও পারতেন না এবং পড়তেও পারতেন না। আর সুরার আয়াতগুলো একবার নাযিলও হয়নি।
- এই সূরায় ‘ওয়া’ অক্ষরের উপস্থিতির ভিত্তিতে পাঁচটি গ্রুপ আছে এবং প্রতিটি গ্রুপে ১৫ টি করে আয়াত বা বাক্য আছে। তাহলে নিশ্চয়ই ১৫ সংখ্যার কোন বিশেষত্ব আছে। অবাক হবার বিষয় হল, এই সুরার ১৫ তম আয়াতে ১৫ টি শব্দ আছে যেন তা উপরের পনের আয়াত বিশিষ্ট পাঁচটি গ্রুপের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
- এবার আসুন ‘তোয়া’ অক্ষরটির দিকে। অক্ষরের দিক থেকেও ‘তোয়া’ অক্ষরটি হল ১৬ তম। ‘তোয়া’ অক্ষরটি দিয়েই এই সূরা শুরু হয়েছে। এই সূরায় মোট ১৬ টি আয়াত আছে যেখানে ‘তোয়া’ অক্ষরটি মাত্র একবার ব্যবহৃত হয়েছে। এই আয়াতগুলো হলো ১, ৭, ১৭, ১৮, ২০, ২১, ২৪, ৩২, ৪০, ৪৮, ৫৪, ৫৯, ৬২, ৬৮, ৮৪ এবং ৮৫। এদের যোগফল হল ৬৪০। আবার ৬৪০ হল ১৬ এর গুণিতক।
৬৪০ = ১৬X৪০
১৬ তো পাওয়া গেল। ১৬ হল ‘তোয়া’ এর নির্দেশক। ১৬ এর আর একটি অর্থ আছে। এই সুরার সবথেকে ছোট আয়াতটি হল দ্বিতীয় আয়াতটি। আর দ্বিতীয় আয়াতে অক্ষরের সংখ্যা হল ১৬ টি।
কিন্তু ৪০ এর অর্থ কি?
৪০ এর অর্থ জানার জন্যে আসুন এই সুরার ৪০ নম্বর আয়াতের দিকে লক্ষ্য করি। ৪০ নম্বর আয়াতটিই হল এই সুরার সবেথেকে বড় আয়াত।
‘তোয়া’ দিয়েই সুরাটি শুরু আর ‘তোয়া’ এর গানিতিক হিসাব থেকে আমরা ১৬ এবং ৪০ পাই। ১৬ হল এই সুরার সবথেকে ছোট আয়াতের বৈশিষ্ট্যের অন্তর্ভুক্ত আর ৪০ হল এই সুরার সবথেকে বড় আয়াতের বৈশিষ্ট্যের অন্তর্ভুক্ত। যেন কোরআন প্রথম অক্ষর ‘তোয়া’ দিয়েই এই সুরার সবথেকে ছোট এবং বড় উভয় আয়াতকে ইংগিত করেছে।
এবার আসুন এই সুরার দ্বিতীয় অক্ষর ‘সিন’ এর দিকে। সিন আরবী অক্ষরগুলোর মধ্যে ১২ তম। এই সূরায় ‘সিন’ অক্ষরটিও দুইবার করে ব্যবহৃত হয়েছে মোট ১৬ বার। এই আয়াতগুলো হলো ৫, ১০, ১১, ১৬, ১৭, ১৮, ২৫, ৩০, ৩৫, ৪০, ৪৮, ৬০, ৭২, ৮০, ৮১, ৮৮। এদের যোগফল হল ৬৩৬। আবার ৬৩৬ হল ১২ এর গুণিতক। ৬৩৬ = ১২X৫৩
এখানে ১২ হল ‘সিন’এর নির্দেশক
আর ৫৩ হল ১৬ তম মৌলিক সংখ্যা।
আর সবথেকে অবাক হবার বিষয় হল, ‘তোয়া’ হল ১৬ তম অক্ষর এবং ‘সিন’ হল ১২ তম অক্ষর। এদের যোগফল ১৬+১২ = ২৮
আর আরবীতে মোট ২৮ টি অক্ষর আছে। ‘আলিফ’ এবং ‘হামজাকে’ একই ধরে। যেন ‘তোয়া’ এবং ‘সিন’ দিয়ে কোরআন যেমন এই সুরার সবথেকে ছোট ও বড় আয়াতকে নির্দেশ করে, ঠিক তেমনি, এই দুই অক্ষরে যেন লুকানো আছে আরবি মোট ২৮ টি অক্ষরের রহস্য।