সূরা তোয়া হা এর অলৌকিকত্বঃ
সুরা তোয়া হা হল কোরআনের ২০ তম সুরা এবং এই সুরায় ১৩৫ টি আয়াত বা বাক্য আছে।
- সম্পুর্ন কোরআনে ‘তোয়া’ অক্ষরটি ব্যবহৃত হয়েছে ১২৭৩ বার। আমরা যদি কোরআনের ১১৪ টি সুরার নামের দিকে লক্ষ্য করি তাহলে ৭ টি সুরা পাব যাদের মধ্যে ‘তোয়া’ অক্ষরটি পাওয়া যাবে। সুরাগুলো হচ্ছে, তোয়া হা (২০), ফাতির (৩৫), তুর (৫২), তালাক (৬৫), ইনফাতির (৮২), মুতাফফিফিন (৮৩) এবং। তারিক (৮৬)। এবার আমরা কোরআনের এমন সুরা গুলো খুঁজব যেই সুরাগুলো ‘তোয়া’ অক্ষর দিয়ে শুরু হয়েছে। এরকম ৪টি সুরা পাওয়া যাবে। এরা হল তোয়া হা (২০), শুয়ারা (২৬), নামল (২৭) এবং কাসাস (২৮)। উপরের দুইটি গ্রুপের মধ্যে কমন এবং প্রথম সুরা হল তোয়া হা (২০)। প্রথম গ্রুপে সুরা আছে ৭ টি এবং দ্বিতীয় গ্রুপে সুরা আছে ৪ টি। এদের গুনফল ৭ X ৪ = ২৮। অবাক হবার বিষয় হল, এই ‘তোয়া হা’ সুরায় মোট ২৮ বার ‘তোয়া’ অক্ষরটি ব্যবহৃত হয়েছে।
- ‘তোয়া হা’ সুরাটি যেই ‘তোয়া’ অক্ষর দিয়ে শুরু হয়েছে, সেই ‘তোয়া’ সম্পুর্ণ কোরআনের একদম মধ্যবর্তী ‘তোয়া’। এই ‘তোয়া’ কে এজন্য গোল্ডেন তোয়া বলা হয়। এর আগে ৬৩৬ টি তোয়া আছে এবং এর পরেও ৬৩৬ টি তোয়া আছে।
- সম্পুর্ন কোরআনের যত আয়াত আছে তার মধ্যে যে কোন একটি আয়াতে ‘তোয়া’ অক্ষরটি ব্যবহৃত হয়েছে সর্বোচ্চ ৪ বার এবং এরকম মোট ৪ টি আয়াত আছে। এই আয়াতগুলো হল (০৫:০৫), (০৫:০৬), (২৪:২১) এবং (২৪:২৬)। এই চারটি আয়াতের মধ্যে আবার দুইটি আয়াত হল পঞ্চম (৫) সুরায় এবং বাকী দুইটি আয়াত হল চব্বিশ তম (২৪) সুরায়। এখানে আমরা ৪ টি আয়াত পেলাম যাদের প্রত্যেকটির মধ্যে ‘তোয়া’ অক্ষরটি ৪ বার করে ব্যবহৃত হয়েছে। ৪X৪ = ১৬। আর অবাক হবার বিষয় হল, ‘তোয়া’ অক্ষরটি হল আরবী হরফের মধ্যে ১৬ তম অক্ষর।
- যেহেতু আমরা উপরের আয়াতে ৪X৪ = ১৬ পেলাম, সুতরাং চলুন, উপরের চারটি আয়াতের মধ্যে চতুর্থ আয়াতটির দিকে লক্ষ্য করি। আয়াতটি হল (২৪:২৬)।
উপরের আয়াতেও ১৬ টি শব্দ আছে। আবার, অন্যদিকে, এই আয়াতে ৪ টি ‘তোয়া’ আছে এবং ১৬ টি শব্দ আছে। অবাক হবার বিষয় হল এদের গুণফল। ৪X১৬ = ৬৪ আর এই ২৪ তম সুরা নুরে আয়াতও আছে মোট ৬৪ টি।
- এবার আসুন, (২৪:২৬) আয়াতটির দিকে লক্ষ্য করি।
الْخَبِيثَاتُ لِلْخَبِيثِينَ وَالْخَبِيثُونَ لِلْخَبِيثَاتِ وَالطَّيِّبَاتُ لِلطَّيِّبِينَ وَالطَّيِّبُونَ لِلطَّيِّبَاتِ أُولَئِكَ مُبَرَّءُونَ مِمَّا يَقُولُونَ لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ (26)
উপরের আয়াতে ‘তোয়া’ অক্ষরটি পরপর চারটি শব্দে এসেছে। এবং শুরু থেকে গুনলে এরা হল যথাক্রমে ৫ম, ৬ষ্ঠ, ৭ম এবং ৮ম শব্দ। এদের যোগফল = ৫+৬+৭+৮ = ২৬ = এই আয়াতের ক্রমিক নম্বর।
আবার পেছন থেকে গুনলে শব্দগুলো হবে ৯ম, ১০ম, ১১ম এবং ১২তম। এদের যোগফল = ৯+১০+১১+১২ = ৪২ = ১৬+২৬। যার মধ্যে ১৬ হল এই আয়াতের মোট শব্দ সংখ্যা এবং ২৬ হল এই সুরায় উপরের আয়াতের নম্বর।
এভাবে আরও অনেক গানিতিক সম্পর্ক আছে তবে সহজগুলোই উল্লেখ করলাম। যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি একজন গনিতবিদ ছিলেন, যিনি ওহী বর্ননার সময় এত সতর্ক ছিলেন যে, সম্পুর্ন কোরআনে সুরা ‘তোয়া হা’ এর তোয়ার সাথে গানিতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছেন, অথচ ইতিহাস বলে তিনি পড়তেও জানতেন না এবং লিখতেও জানতেন না? যেখানে একজন শিক্ষিত মানুষের পক্ষেই এরকম সূরা তৈরী সম্ভব নয় সেখানে আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর আগে রাসুল (সঃ) কিভাবে এই কোরআনের সূরা রচনা করবেন অথচ তিনি লিখতেও জানতেন না এবং পড়তেও জানতেন না? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।