সুরা বাকারা (Surah Baqarah 02, ayat 02) এবং সুরা আনআম(Surah Anam 06, ayat 92)

sura anam

সুরা বাকারা (Surah Baqarah 02, ayat 02) এবং সুরা আনআম(Surah Anam 06, ayat 92)

 

কোরআনে বিভিন্ন স্থানে কোরআনকে ‘ঐ বই’ আবার বিভিন্ন স্থানে ‘এই বই’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সাধারণত আমরা দূরের জিনিষকে নির্দেশ করতে শব্দটি ব্যবহার করি এবং কাছের জিনিষকে নির্দেশ করতে এই শব্দটি ব্যবহার করি। এবার আসুন (০২:০২) আয়াতটির অংশের দিকে লক্ষ্য করি,

ذَلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ

অর্থঃ কিতাব, তাতে কোন সন্দেহ নেই।

উপরের আয়াতে ذَلِكَ অর্থ হল ঐ। ঐ দিয়ে আমরা দূরের জিনিষকে বোঝাই। আরবী ভাষায় কোন বই তার লিখার সাথে সম্পর্কিত। পড়ার সাথে নয়। আর কোরআনের লিখিত রূপটি সংরক্ষিত আছে ‘লাও-হে-মাহফুজ’ নামক স্থানে। ‘লাও-হে-মাহফুজ’ নামক স্থানটি সাত আসমানের উপর আল্লাহর আরশের সাথে সংযুক্ত। কোরআনে ‘লাও-হে-মাহফুজে’ প্রথমে সংরক্ষিত ছিল। পরে আল্লাহ তাঁর ফেরেশতার মাধ্যমে পৃথিবীর শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর উপর ধাপে ধাপে নাযিল করেন। আর এ জন্যই উপরের আয়াতের অংশটিতে ‘ঐ’ ব্যবহার হওয়াই যুক্তিযুক্ত।

এবার আসুন (০৬:৯২) আয়াতটির অংশের দিকে লক্ষ্য করি,

وَهَذَا كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ

অর্থঃ এই এক বরকতপুর্ণ গ্রন্থ যা আমি পাঠিয়েছি…

উপরের আয়াতে وَهَذَا অর্থ হল এই। ‘এই’ শব্দ দিয়ে আমরা কাছের জিনিষকে বোঝাই। আর এখানে বইটির উৎস সম্পর্কে বলা হচ্ছে না। বরং, বইটি কোথায় পাঠানো হচ্ছে – সে সম্পর্কে বলা হচ্ছে। অর্থ্যাৎ, এই পৃথিবীর কথা বোঝানো হচ্ছে। আর পৃথিবীতে কোরআন পাঠানো হচ্ছে মানুষের পড়ার জন্য। এখানে বই লিখার সাথে নয় বরং পড়ার সাথে সম্পর্কিত। আর এ জন্যই উপরের আয়াতের অংশটিতে ‘এই’ ব্যবহার হওয়াই যুক্তিযুক্ত।

যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি একজন ভাষাবিজ্ঞানী ছিলেন, যিনি ওহী বর্ননার সময় কোথায় ‘এই’ হবে আর কোথায় ‘ঐ’ হবে-তা ভেবে ভেবে নির্ভুল্ভাবে কোরআন রচনা করেছেন, অথচ ইতিহাস বলে তিনি পড়তেও জানতেন না এবং লিখতেও জানতেন না? নাউযুবিল্লাহ কোরআন আল্লাহর বানী।

 

Author: moq@2020@

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *