মহাকাশে সময় (Spacetime)
মুসলমানরা যখন সালাত আদায় করে তখন তারা সিজদা দেয়। সিজদা দেয়ার সময় তারা তাদের নাক ও কপাল মেঝেতে লাগিয়ে রাখে। তারা এমনভাবে সিজদা করে যেন তারা মুখমণ্ডল মেঝের সাথে সমান্তরাল হয়ে যায়। এখন ধারণা করুন আপনি সিজদায় মেঝেতে কপাল না লাগিয়ে দাড়িয়ে সোজা হয়ে দাড়িয়ে আছেন কিন্তু মেঝেটাই নিচের থেকে বেকে এসে ভুমির সাথে লম্ব হয়ে এবং আপনার সমান্তরাল হয়ে আপনার নাক ও কপালকে স্পর্শ করল। মহাকাশে ঘুর্ণায়মান প্রতিটি নক্ষত্রের ক্ষেত্রেও এই ঘটনাই ঘটে। এবার মেঝেকে ভাবুন সময়ের তল এবং আপনার নাক ও কপালের সরলরেখা বরাবর যে খাড়া তল তৈরী হয়, তাকে ভাবুন নক্ষত্রের তল। মেঝে যেমন ৯০ ডিগ্রী বেকে আপনার নাক ও কপালের সাথে সমান্তরাল হয়ে যায়, ঠিক তেমনি, সময়ও নক্ষত্রের মুখের সাথে সমান্তরাল হয়ে যায়। আসলে নক্ষত্রের ভরই সময়কে বলে দেয় কিভাবে বেকে যেতে হবে।
মহাকাশে সময় নামক মাত্রাই নির্ধারন করে দেয় ভর নামক মাত্রাকে কিভাবে নড়তে হবে। আর ঐ একই মুহুর্তে, ভর নামক মাত্রাই নির্ধারন করে দেয় সময় নামক মাত্রাকে কিভাবে বেকে যেতে হবে।
অর্থ্যাৎ, শুধুমাত্র কপাল মেঝেতে নেমেই সিজদা হয়না বরং মেঝেও বেকে খাড়া হয়ে একজন সোজা মানুষের কপালে লেগে সিজদা হতে পারে। আমরা মাথা নিচু করে সিজদা যেতে পারি কিন্তু গাছপালা বা নক্ষত্ররা আমাদের মত নিচু হয়ে সিজদা দিতে পারেনা। কিন্তু, সময় নামক মাত্রা বেঁকে এসে খাড়া হয়ে নক্ষত্রের মাঝ বরাবর স্পর্শ করে এবং এভাবেই নক্ষত্ররা সিজদা দেয়। যার সামান্য পরিমান ভরও আছে, সেও এভাবেই সিজদা করে। এভাবে মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুই আল্লাহকে প্রতিনিয়ত সিজদা করে চলেছে।
আজ থেকে প্রায় ১৪৫০ বছর আগে কোরআনে (৫৫:৬) এ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
٦ وَالنَّجْمُ وَالشَّجَرُ يَسْجُدَانِ
অর্থঃ নক্ষত্র এবং গাছপালা (তার জন্য) সিজদায় অবনত।
And the stars and the trees prostrate.
আগে মানুষ ভাবত, নক্ষত্ররা আবার কিভাবে মহাশূন্যে সিজদা দেয়? আধুনিক বিজ্ঞানের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি যে, মহাশুন্যে সময় নামক একটি মাত্রা আছে এবং সময়ের তল বেঁকে গিয়ে নক্ষত্রসহ সকল ভরকে স্পর্শ করে। এভাবেই প্রতিটি বস্তু আল্লাহর জন্য সিজদারত আছে।
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন তাদের কাছে প্রশ্ন তিনি কিভাবে জানলেন সময় নামক একটি মাত্রা আছে? নক্ষত্ররা এবং অন্য সকল ভর বিশিষ্ট বস্তুর প্রয়োজনে সময় বেঁকে যেতে পারে? তিনি কি এ বিষয়ের উপর গবেষণা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছিলেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।