ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন (Change Management)

Change Managment

ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন (Change Management)

ইসলাম অনুযায়ী মানুষের সকল ভাগ্য পুর্ব নির্ধারিত। আর এ জন্যই অনেকে ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশ হয়ে পরে। তারা ভাবে মানুষ যতই চেষ্টা করুক- তাই হবে যা আগে থেকে নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে। অর্থ্যাৎ, মানুষের চেষ্টায় কোন লাভ নেই। তাই হবে যা আগে থেকে লিখে রাখা হয়েছে। সীমাবদ্ধ জ্ঞানের কারণেই মানুষ এমনটি ভাবে। আমরা সময়ের অধীনে এবং পৃথিবীর এই সময়টি হল আমাদের জন্য পরীক্ষা। কিন্তু আল্লাহ সময়ের উপর নির্ভরশীল নয় এবং তিনি সকল বিষয় থেকে অমুখাপেক্ষী এবং সর্বজ্ঞানী। তিনি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ- সবই জানেন। আমাদের নিজেদের স্বার্থেই অর্থ্যাৎ দুনিয়া ও পরকালের শান্তির জন্যই আমাদের যাবতীয় কল্যাণ কাজের চেষ্টা করতে হবে। কারণ, আমরা আল্লাহর উপর নির্ভরশীল কিন্তু আল্লাহ আমাদের উপর নির্ভরশীল নয়।  আল্লাহ মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত বলে সম্মান দিয়েছেন এবং দুনিয়াতে মানুষকে তাঁর খলিফা হিসেবে পাঠিয়েছেন। আর পৃথিবী ও আকাশের সবকিছু আমাদের জন্য নেয়ামত হিসেবে দিয়েছেন। আর এই সবকিছু সুনির্দিষ্ট পরিমানে উত্তম উপায়ে এমন ভাবে ব্যবহার করতে বলেছেন যেন তাঁর সকল সৃষ্টির কল্যাণ সাধিত হয়। আর এই খলিফার কাজই হল ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করা। বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে আমরা জানতে পারছি যে আকাশের যে স্তরটি অতিবেগুনী রশ্মিকে প্রবেশে বাঁধা দেয়, ফ্রিজের বা এসি থেকে নিঃসৃত ফ্রেয়ন গ্যাস ঐ স্তরটিকে ফুটো করে দেয়। ফলে সুর্যের অতিবেগুনী রশ্মি আলো পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং এর ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ ফলতে শুরু করে। সাগরের পানির উচ্চতা বেড়ে যায় এবং নিচু অঞ্চলগুলো সব ডুবে যায়। আবার, অন্যদিকে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে ফলন বাড়ছে ঠিকই কিন্তু কীটপতঙ্গ কমে যাচ্ছে এবং জীববৈচিত্র কমে যাচ্ছে। অর্থ্যাৎ, পৃথিবীর প্রতিটি প্রানী ও জীব একটি আর একটির উপর নির্ভরশীল। পৃথিবীর এই প্রান্তে একটি ঢিল ছুড়লে পৃথিবীর ঐ প্রান্তে বন্যা হয়ে যেতে পারে। একটিকে অতিরিক্ত ব্যবহার করলে অন্যটির ক্ষতি হয়। আর এই ক্ষতি থেকে রক্ষার মাধ্যমে সবার শান্তি ও ভারসাম্য রক্ষাই হল ম্যানেজমেন্টের কাজ। কোরআনে ম্যানেজমেন্টে বা ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে নিন্মের (১৩:১১) আয়াতটি পাওয়া যায়।

لَهُ مُعَقِّبَاتٌ مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ يَحْفَظُونَهُ مِنْ أَمْرِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتَّى يُغَيِّرُوا مَا بِأَنْفُسِهِمْ وَإِذَا أَرَادَ اللَّهُ بِقَوْمٍ سُوءًا فَلَا مَرَدَّ لَهُ وَمَا لَهُمْ مِنْ دُونِهِ مِنْ وَالٍ (11)

অর্থঃ …আল্লাহ তায়ালা কোন জাতির অবস্থার পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করে…

…Indeed Allah will not change condition of the people until they change what is in them selves…

সুতরাং, উপরের আয়াত থেকে অনুধাবন করা যায় যে, আমাদের অবস্থা পরিবর্তন করতে হলে আমাদেরকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। আর আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করে ব্যবস্থা নিলে এবং সেই অনুযায়ী চেষ্টা করলে আল্লাহ তাঁর ফেরেশতাদের দিয়ে সাহায্য করবেন।

যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি ঐ আমলের ম্যানেজমেন্টের উপর গবেষনা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছেন? নাউযুবিল্লাহ কোরআন আল্লাহর বানী।

 

Author: moq@2020@

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *