বারবার বলা (Power of Repetation)

Reapetaion

বারবার বলা (Power of Repetation)

ইসলাম সবার প্রতি সুবিচার করে। ইসলাম যেমন মালিকের লাভের দিকে লক্ষ্য রাখে এবং তা থেকে যাকাত প্রদান করতে বলে, ঠিক তেমনি, শ্রমিকের দিকে লক্ষ্য রাখে। শ্রমিকের উপর কাজের চাপ অমানবিক হচ্ছে কি না অথবা শ্রমিকের মুজুরী তার নুন্যতম অভাবকে মিটাতে অর্থ্যাৎ মুজুরী বাজারের দ্রব্যমূল্যের তুলনায় কম হয়ে যাচ্ছে কিনা সেদিকেও লক্ষ্য রাখে। কোরআনের সুরা আর রাহমানের একটি আয়াতের (৫৫:১৩) দিকে লক্ষ্য করি।

فَبِأَيِّ آَلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (13)

অর্থঃ অতএব, (হে মানুষ ও জীন) তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে!

So, which of the favors of your Lord would you deny?

আমরা মানুষ খুবই অকৃতজ্ঞ। আল্লাহর দেয়া এত নেয়ামতের মধ্যে থেকেও তার  বিধানের বাইরে চলে যাই। তার নেয়ামত অস্বীকার করি। পার্থিব জীবনেও আমরা এর প্রমাণ দেখতে পাই। আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক জীবনেও এই ধরনের কৃতজ্ঞতা অস্বীকারের উদাহরণ দেখা যায়। একটি প্রতিষ্ঠানের যেমন কর্মীর প্রয়োজন, তেমনি কর্মীর প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন। কিন্তু অনুন্নত ও জনবহুল দেশে (যেসব দেশে শ্রমের মূল্য কম) দেখা যায় বড় বড় প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষ কর্মীর স্বার্থকে অবজ্ঞা করে লাভের অর্থ শুধুমাত্র নিজেই কুক্ষিগত করে। ফলে দেশের সম্পদ কেন্দ্রীভূত হয়ে পরে অল্প কিছু মানুষের কাছে যা কোরআনে নিষেধ করা হয়েছে। আবার, অন্যদিকে একশ্রেণীর কর্মী আছে যারা নিজেদের স্বার্থে দল সৃষ্টি করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে উৎপাদনে বাধা দিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে। এরাও প্রতিষ্ঠানের ভাল-মন্দ, সুসময়-দুঃসময় চিন্তা না করে কিভাবে আরও সুযোগ সুবিধা নেয়া যায়, সেদিকেই ব্যস্ত থাকে। এরা প্রতিষ্ঠানের প্রতি অকৃতজ্ঞ থাকে। সুতরাং, প্রতিষ্ঠানের মালিকদের যেমন কর্মীর শ্রমলব্ধ লাভের অর্থ পেয়ে সন্তুষ্ট থাকা উচিত, ঠিক তেমনি, কর্মীদেরও প্রতিষ্ঠান থেকে সুযোগ সুবিধা পেয়ে

কৃতজ্ঞ ও বিশ্বস্ত থাকা উচিত। উপরের আয়াতে আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর সৃষ্ট সমগ্র নেয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে বলেছেন।

এই সুরায় ৭৮ টি আয়াত আছে। এই ৭৮ টি আয়াতের মধ্যে উপরের আয়াতটি এসেছে ৩১ বার। অর্থ্যাৎ, আল্লাহ আমাদের একবার নয়, দুবার নয় বরং ৩১ বারবার অর্থ্যাৎ বারবার তার নেয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞ হতে বলছেন। এখানে আরও একটি শিক্ষা আছে। আর তা হল বারবার চেষ্টা করা। অর্থ্যাৎ, একবার না পারিলে দেখ শতবার। প্রাতিষ্ঠানিক কাজে একবার বা দুবারে ব্যর্থ হলে হাল ছেড়ে দিতে নেই। বরং বারবার চেষ্টা করতে হবে যেমনটি এই সুরায় একই আয়াতের ৩১ বার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।

যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি ঐ আমলে ব্যবসার ক্ষেত্রে বারবার চেষ্টার গুরুত্বের উপর গবেষনা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছেন? নাউযুবিল্লাহ কোরআন আল্লাহর বানী।

 

Author: moq@2020@

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *