প্রকাশভঙ্গি ও দেহভঙ্গী (Approach & Attitude)
মানুষের কথা বলার প্রকাশভঙ্গিমা এবং দেহভঙ্গীমার মধ্যে তার অপ্রকাশিত মনের কথা লুকিয়ে থাকে। কোন ব্যাক্তি মুখে হয়ত বলছে ‘হ্যাঁ’ কিন্তু তার দেহভঙ্গীমা (body language) থেকে অনুধাবন করা সম্ভব যে তার আসল উত্তর হল ‘না’। কন্ঠস্বরের উঠানামা থেকেও বোঝা যায় কোন ব্যক্তি বিনয়ী হয়ে কথা বলছে অথবা উদ্ধত হয়ে কথা বলছে। আসুন, কোরআনের (০৭:১৬) আয়াতটির দিকে লক্ষ্য করি।
قَالَ فَبِمَا أَغْوَيْتَنِي لَأَقْعُدَنَّ لَهُمْ صِرَاطَكَ الْمُسْتَقِيمَ (16)
অর্থঃ সে বলল, যেহেতু তুমি (এ আদমের জন্যেই) আমাকে গোমরাহীতে নিমজ্জিত করলে, (তাই) আমিও এদের (গোমরাহ করার) জন্য অবশ্যই তোমার (প্রদর্শিত প্রতিটি) সরল পথে (র বাকে বাকে ওৎ পেতে) বসে থাকব।
উপরের আয়াতে আল্লাহর সাথে শয়তানের কথোপকথনে শয়তান আল্লাহকে চ্যলেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল। সে উদ্ধত প্রকাশ করেছিল এবং অহংকার করেছিল যা তার বাচন ভঙ্গির মাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে গিয়েছিল। প্রকাশভঙ্গিমা বা দেহভঙ্গীমার সাথে ইমোশোনাল ইন্টিলিজেন্সের সম্পর্ক রয়েছে যার ব্যবহার বিভিন্ন আধুনিক প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট ব্যবহার ও বিভিন্ন সফটওয়ারে পাওয়া যায়। শয়তান উদ্ধত হয়েছিল ফলে সে আল্লাহ কতৃক বহিস্কৃত হয়েছিল।
কিন্তু, এই আয়াতের কিছু পরেই (০৭:২৩) নং আয়াতে আবার আল্লাহর ক্ষমার উদাহরণ পরিলক্ষিত হয়।
قَالَا رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ (23)
অর্থঃ (নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে) তারা দুজনেই বলে উঠল, হে আমাদের মালিক, আমরা আমাদের নিজেদের উপর জুলুম করেছি, তুমি যদি আমাদের মাফ না কর, তাহলে অবশ্যই আমরা চরম ক্ষতিগ্রস্থদের দলে শামিল হয়ে যাব।
They said (Adam and eve), “Our Lord, we have wronged ourselves, if you did not forgive us and have mercy upon us we will surely be among the losers”.
উপরের আয়াতে আদম এবং হাওয়া উভয়ে একত্রে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইছিল। তারা অনুগত হয়েই আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইল। কিন্তু শয়তান উদ্ধত হয়েছিল। আর এ জন্যই আল্লাহ আদম এবং হাওয়াকে একটি সুযোগ দিলেন পৃথিবীতে পাঠিয়ে। এখানে যারা ভাল কাজ করবে, মৃত্যু বরণের পর তারা আবার জান্নাতে যাবার সুযোগ লাভ করবে।
আর এ জন্যই কথা বলার সময় প্রকাশভঙ্গি ও দেহভঙ্গী খুবই গুরুত্বপুর্ণ। এ জন্যই বলা হয় আচরণ দিয়ে সব কিছু অর্জন করা যায়। আর এজন্যই আধুনিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ব্যবহার জনিত ভারসাম্য রক্ষা ও কাস্টমার সেবার জন্য বিসনেজ-বিহ্যাভিয়ার অধ্যায়ন করানো হয়। সুতরাং, উদ্ধতরা পরাজিত হয় আর অনুগতরা জয়ী হয়।