জুম্মার সময় ব্যবসা বন্ধ:
সপ্তাহে সাতদিন। প্রতিদিনই ব্যবসা করা যায়। আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন আর সুদকে করেছেন হারাম। কিন্তু শুক্রবার জুম্মার সময় আল্লাহ ব্যবসা বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। কোরআনে আল্লাহ এ বিষয়ে (৬২:৯-১০) আয়াত উল্লেখ করেছেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ (9) فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانْتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِنْ فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ (10)
অর্থঃ হে ঈমানদার ব্যক্তিরা, জুমুয়ার দিনে যখন তোমাদের নামাযের জন্য দাক দেয়া হবে তখন তোমরা (নামাযের মাধ্যমে) আল্লাহর স্মরণের দিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাও এবং (সে সময়ের জন্যে) কেনাবেচা ছেড়ে দাও, এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম, যদি তোমরা তা উপলব্ধি কর।
অতপর যখন (জুমুয়ার) নামায শেষ হয়ে যাবে, তখন তোমরা (কাজেকর্মে) পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ করো আর আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করো, আশা করা যায় তোমরা সাফল্য লাভ করতে পারবে।
উপরের আয়াতে শুক্রবার জুমুয়ার নামাযের সময় ব্যবসা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এর ধর্মীয় গুরুত্ব অনেক। আপাত দৃষ্টিতে মনে হয়ে জুমুয়ার নামাযের সময় ব্যবসা বন্ধ রাখলে আয় কম হবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ হলেন উত্তম রিজিকদাতা এবং উপরের আয়াতে বলা হয়েছে জুমুয়ার নামাযের সময় ব্যবসা বন্ধ রাখলে সেটাই হবে মানুষের জন্যে উত্তম। আর যে আল্লাহর কথা মেনে চলে আল্লাহ তার রিজিক বাড়িয়ে দেন। তাছাড়া সম্পুর্ন সপ্তাহের গুনাহ আল্লাহ শুক্রবার জুমুয়ার নামাযের সময় মাফ করে দেন।
কিন্তু অনেকে উপরের আয়াতের ধর্মীয় ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নাও হতে পারে। তারা প্রশ্ন করে এর পার্থিব গুরুত্ব কি? প্রথমত, ব্যবসায়ীদের সম্পুর্ণ সপ্তাহ সাধারণত একই প্রক্রিয়ায় কাটে। একই কাজ করতে করতে তাদের মধ্যে একঘেয়েমী ভাব চলে আসে। জুমুয়ার নামাযের সময় ব্যবসা বন্ধ রাখলে তা ব্যবসায়ীদের একঘেয়েমী ভাব দূর করে। দ্বিতীয়ত, কেবলমাত্র জুম্মার নামাযের সময়ই খুতবা হয়। অর্থ্যাৎ, ঈমাম বা খতিব মসজিদের জামাতে উপস্থিত মুসলমানদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। এই বক্তব্যগুলো সাধারণত সময়োপযুগী, উৎসাহমুলক এবং সংশোধনমূলক হয়ে থাকে। যার ফলে শ্রোতারা এক সপ্তাহ পরপর মানসিকভাবে পুনরজ্জীবিত হয় এবং নতুন উদ্যমে আবার কর্মস্থলে ফিরে যায়। আর এজন্যই খুতবার বক্তব্যের মান নিয়ন্ত্রণও খুব গুরুত্বপুর্ন।
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি সপ্তাহ পরপর মুসলমানদের মানসিক অবস্থার উপর গবেষনা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।