আলোর বিক্ষেপন (Rayleigh scattering)
আজ থেকে প্রায় ১৪৫০ বছর আগে হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর যুগের মানুষেরা ধারণা করত, আকাশের রঙ নীল এবং সুর্যের রঙ হলুদ। কিন্তু, আধুনিক এই যুগে আমরা জানতে পেরেছি যে, আকাশের রঙ কালো এবং সুর্যের আলোর রঙ সাদা। আলোর বিক্ষেপনের কারণেই এমনটি হয়। আমাদের দৃশ্যমান যে সব রঙ (বেগুনী, নীল, আকাশী, সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল) আছে, তার মধ্যে লাল আলো অপেক্ষা নীল আলো বেশি বিক্ষিপ্ত হয় । কারণ, নীল আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য, আকারে লাল আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য অপেক্ষা ছোট। এ জন্য সুর্য অস্ত যাওয়ার সময় আকাশের রঙ লাল দেখায়। কারণ, ঐ সময় সুর্যের আলোক রশ্মিকে, আমাদের পৃথিবীর চারপাশে যে বায়ুমণ্ডলীয় স্তর আছে, তার বেশিরভাগ স্তরকে অতিক্রম করে তারপর আমাদের চোখে পৌছাতে হয়। আর দিনের বেলায় বাতাসের ধুলিকনা নীল আলো বেশি বিক্ষিপ্ত করে। সুর্যের আলোর বিক্ষেপনের কারণেই আমরা দিনের বেলায় আকাশকে নীল দেখি। এসময় আলোকে পৃথিবীর কম বায়ুমণ্ডলীয় স্তর অতিক্রম করতে হয়। অন্যদিকে, সুর্যাস্তের সময় আলোকে পৃথিবীর চারপাশের বেশি বায়ুমণ্ডলীয় স্তর অতিক্রম করতে হয়। এজন্য, ঐ সময় আমরা আকাশে হলুদ বা লাল রঙ দেখতে পাই। কিন্তু, আসলে আকাশের রঙ হল কালো এবং সুর্যের রঙ হল সাদা। কোরআনে (৭০:৮) এ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
٨ يَوْمَ تَكُونُ السَّمَاءُ كَالْمُهْلِ
অর্থঃ সেদিন আসমান গলিত তামার মত হয়ে যাবে।
On the Day when the sky will look like tar.
উপরের আয়াতে বলা হয়েছে আকাশ দেখতে ‘টার’ এর মত হয়ে যাবে। আরবি ‘মুহলি’ শব্দের অর্থ হল ‘টার’। আর ইংরেজি ‘টার’ শব্দের অর্থ হল গলিত কালো বর্জ বা আলকাতরা। আবার একে বিভিন্ন পদার্থের-মিশ্রণের-গলিত অবস্থার রঙের সাথেও অনেকে তুলনা করা হয়েছে। সুর্য এবং পৃথিবীর চারপাশের বায়ুমণ্ডলীয় স্তরের কারণেই আমরা কখনও আকাশকে নীল আবার কখনওবা আকাশকে লাল রঙের দেখতে পাই। তবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ভিতরে উৎপন্ন রং এবং মহাকাশে উৎপন্ন রং দেখতে একরকম নাও হতে পারে। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞানের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, আকাশের সত্যিকারের রঙ হল আলকাতরার মত কালো। আর সুর্যের আলো হল সাদা এবং এই সাদা আলোতে আবার সাতটি রঙ আছে।
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন তাদের কাছে প্রশ্ন তিনি কিভাবে জানলেন এই মহাকাশের রঙ কালো এবং সুর্যের আলো সাদা? তিনি কি এ বিষয়ের উপর গবেষণা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছিলেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।