আলোর গতি (Speed of Light)
আমরা মুসলিমরা বিশ্বাস করি ফেরেশতারা বা এঞ্জেলরা হল আলোর তৈরী। এদের ভর ও ঘনত্ব অত্যন্ত কম। আলো হচ্ছে কখনও কণা, কখনও আবার তরঙ্গ। ফেরেশতারা শুন্য (কিলোমিটার/ সেকেন্ড) বেগ থেকে প্রায় আলোর গতিতে অর্থ্যাৎ, প্রায় ৩,০০,০০০ (কিলোমিটার/ সেকেন্ড) বেগে চলাচল করতে পারে। আল্লাহর দেয়া হুকুমগুলো ফেরেশতারাই পালন করে থাকে। তবে ফেরেশতারা আল্লাহর খুব কাছাকাছি যেতে পারেনা। একটি নির্দিষ্ট দুরত্ব থেকে হুকুম গ্রহণ ও পালন করে। কোরআনে ফেরেশতারা কিভাবে চলাচল করে (৩২:৫) সে বিষয়ে একটি আয়াত আছে।
٥ يُدَبِّرُ الْأَمْرَ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الْأَرْضِ ثُمَّ يَعْرُجُ إِلَيْهِ فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ أَلْفَ سَنَةٍ مِمَّا تَعُدُّونَ
অর্থঃ আসমান থেকে জমীন পর্যন্ত সবকিছু তিনিই পরিচালনা করেন, তারপর (সবকিছুকে) তিনি উপরের দিকে নিয়ে যাবেন (এমন) এক দিনে যার পরিমান তোমাদের গননায় হাজার বছর।
(Allah) Rules the cosmic affair from the heavens to the Earth. Then this affair travels to Him a distance in one day, at a measure of one thousand years of what you count.
কিন্তু, হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর যুগে গাড়ি, ট্রেন বা বিমান ছিলনা। তারা তখন কিলোমিটার বা মাইল দিয়ে দুরত্ব হিসাব করতনা। বরং, তারা হিসাব করত দিন হিসেবে। অর্থ্যাত, হেটে যেতে কতদিন লাগবে। তখন তারা চাঁদের হিসেবে বছর, মাস ও দিন গননা করত। চাঁদের অবস্থান অনুযায়ী দিনপঞ্জিকা বা ক্যলেন্ডার ব্যবহার করত। চাঁদের হিসেবে বার মাসে এক বছর। সময়ের হিসাব চাঁদ অনুযায়ী হত। সুর্য অনুযায়ী নয়। অর্থ্যাত, উপরের ‘একদিন সমান হাজার বছর হবে’ হিসাবটিও চাঁদের হিসেবে হবে। সুর্যের হিসেবে নয়। যেহেতু, এই আয়াতটি দ্বারা মহাকাশের দুরত্ব বোঝানো হচ্ছে যেহেতু সবকিছুকে উপরের দিকে নিয়ে যাবার কথা বলা হচ্ছে। আর আল্লাহর হুকুম ফেরেশতারাই পালন করেন। সুতরাং, বলা যায় আলোর গতিতেই ফেরেশতারা চলাচল করে সবকিছুকে উপরের দিকে নিয়ে যাবে। চাঁদের ক্যালেন্ডারের হিসেবে ১ বছরে ১২ মাস। এই চন্দ্রমাস আবার দুইভাবে মাপা হয়। একটি হল সুর্যের সাপেক্ষে আর অন্যটি হল মহাকাশের অন্য নক্ষত্রের সাপেক্ষে। মহাকাশের অন্য নক্ষত্রের সাপেক্ষে যে চন্দ্রমাস মাপা হয় তাকে সাইডরিয়েল মাস বলে। এবং এই হিসেবে ১ মাসে ২৭.৩ দিন। ঐ আমলে বেশি দুরত্বের সবকিছু চাঁদের হিসাব ও দিনের হিসাবে করা হত।
ফেরেশতাদের একদিনের অতিক্রান্ত পথ = পৃথিবীর হিসেবে ১০০০ বছরের অতিক্রান্ত পথ
= (১২ X ১০০০) বার চাঁদের ঘুর্ননে যে পথ অতিক্রান্ত হয়
= ১২,০০০ বার চাঁদের কক্ষপথ ঘুর্ননে যে পথ অতিক্রান্ত হয়
আর, আলোর বেগ = দুরত্ব / সময়
আর, আলোর বেগ = (১২,০০০ বার চাঁদের কক্ষপথ ঘুর্ননে যে পথ অতিক্রান্ত হয়) / (পৃথিবীর ১ দিন)
আর, আলোর বেগ = (১২,০০০ বার চাঁদের কক্ষপথ ঘুর্ননে যে পথ অতিক্রান্ত হয়) / (২৪ ঘণ্টা)
এভাবে হিসেব করে যে বেগ বের হয়, তা বিজ্ঞানীদের অন্য পদ্ধতিতে পরীক্ষার মাধ্যমে বের করা আলোর বেগের প্রায় সমান হয়। আলোর বেগ প্রায় ৩,০০,০০০ কিলোমিটার / সেকেন্ড।
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন তাদের কাছে প্রশ্ন তিনি কিভাবে ওই আমলে কোন আধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়াই ধারনা করলেন যে, ফেরেশতাদের এক দিনের পথ পৃথিবীর ১০০০ বছরের সমান? এবং তা সত্য হয়ে গেল এবং তা থেকে আলোর সঠিক গতিও পাওয়া গেল। তিনি কি এ বিষয়ের উপর গবেষণা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছিলেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।