সাবডাকশন (Subduction)

Subduction

সাবডাকশন (Subduction)

আগের দিনে মানুষ ভাবত পাথর শুধু মাটির উপরেই থাকে। কেউ বিশ্বাস করতনা যে, মাটির নিচে অনেক গভীরেও পাথর থাকতে পারে। সম্প্রতি আমরা জানতে পেরেছি যে, মাটির শত কিলোমিটার নিচে গিয়েও পাথর পাওয়া যায়। পৃথিবীর ব্যসার্ধ প্রায় ৬৩৭১ কিলোমিটার। আর হিমালয়ের মাউন্ট এভারেস্টের চুড়া ভুমি থেকে প্রায় ৮.৮ কিলোমিটার উচু। অনেক বিজ্ঞানীর মতে মাটির প্রায় ২৫০ কিলোমিটার নিচেও মাউন্ট এভারেস্টের শিকড় পাওয়া যাবে।

পৃথিবীর উপরিভাগ অনেকগুলো প্লেটের উপর বসানো। এগুলোকে টেকটোনিক প্লেট বলে। এই প্লেটগুলো একটি আর একটিকে ধাক্কা দেয়, ফলে এদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আর এই সংঘর্ষের ফলে কোন কোন প্লেট মাটি থেকে উপরে উঠে যায়। আবার কোন কোন প্লেট নিচের দিকে নেমে যায়। যেমন এশিয়ান বড় টেকটোনিক প্লেটের চাপে ইন্ডিয়ান টেকটোনিক প্লেট নিচের দিকে নেমে যায়। এভাবে একটি প্লেটের চাপে অন্য একটি প্লেটের নিচের দিকে নেমে যাওয়াকে সাবডাকশন বলে।

যখন সাবডাক্সন ঘটে, অর্থ্যাৎ, একটি প্লেটের চাপে অন্য প্লেটটি নিচের দিকে চলে যায়, তখন পাথরের সাথে সাথে অনেক পানিও নিচের দিকে যায়। বিজ্ঞানীরা ভুমি থেকে ৪১০ কিলোমিটার নিচের খনিজেও প্রচুর পানির উপস্থিতি খুঁজে পেয়েছেন। মাটির নিচে প্রচুর চাপের ফলে সব পাথর ভেঙ্গে যায়। আমরা শুধুমাত্র ভুমির উপরের পাথরকেই চিনতে পারি। কিন্তু, মাটির অনেক নিচেও যে প্রচন্ড চাপে পাথর ভেঙ্গে যায় তা আগের দিনের মানুষ জানতোনা।  কিন্তু কোরআনে (০২:৭৪) আজ থেকে প্রায় ১৪৫০ বছর আগেই এ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

٧٤  ثُمَّ قَسَتْ قُلُوبُكُمْ مِنْ بَعْدِ ذَٰلِكَ فَهِيَ كَالْحِجَارَةِ أَوْ أَشَدُّ قَسْوَةً ۚ وَإِنَّ مِنَ الْحِجَارَةِ لَمَا يَتَفَجَّرُ مِنْهُ الْأَنْهَارُ ۚ وَإِنَّ مِنْهَا لَمَا يَشَّقَّقُ فَيَخْرُجُ مِنْهُ الْمَاءُ ۚ وَإِنَّ مِنْهَا لَمَا يَهْبِطُ مِنْ خَشْيَةِ اللَّهِ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ

অর্থঃ (কিন্তু এতো বড় একটি নিদর্শন সত্ত্বেও) অতপর তোমাদের মন কঠিন হয়ে গেল। (এমন কঠিন) যেন তা (শক্ত) পাথর, (বরং মাঝে মাঝে মনে হয়) পাথরের চেয়েও (বুঝি তা) বেশি কঠিন; কেননা কিছু পাথর এমন আছে যা থেকে (মাঝে মাঝে) ঝর্নাধারা নির্গত হয়, আবার কোন কোন সময় তা বিদীর্ন হয়ে ফেটেও যায়, এবং তা থেকে পানিও (বেরিয়ে আসে, অবশ্য) এর মধ্য থেকে (এমন কিছু পাথর আছে), যা আল্লাহর ভয়ে ধ্বসে পড়ে, আল্লাহ তায়ালা তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে মোটেও গাফেল নন।

Then after that your hearts hardened like rocks, or even harder. For there are some rocks from which rivers gush out, and others that crack and water comes out from them, and others that descend in awe of Allah. Allah is not unaware of what you do.

উপরের আয়াতে পাথরের সাথে পানির সম্পর্কের কথা তিনবারে বলা হয়েছে। প্রথমবারে বলা হয়েছে পাথরের সাথে ঝর্নাধারার সম্পর্ক। দ্বিতীয়বারে বলা হয়েছে পাথর ফেটে পানি বের হবার কথা। কিন্তু তৃতীয়বারে বলা হয়েছে পাথর আল্লাহর ভয়ে ধসে পরে। তৃতীয়বারে পাথরের সাথে পানির কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়নি। এর কারণ কি?

সম্প্রতি আমরা জানতে পেরেছি যে, মাটির অনেক নিচে প্রচণ্ড চাপে সব পাথর ভেঙ্গে যায়। এবং তা খনিজে পরিনত হয়। আর ঐ সব খনিজ পদার্থে প্রাপ্ত পানি তরল হিসেবে থাকেনা বরং আয়নিক আকারে থাকে। সুতরাং, তৃতীয়বারে পাথরের সাথে পানির কথা আলাদাভাবে উল্লেখ না করে কোরআন সঠিক বার্তাই দিয়েছে।

যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন তাদের কাছে প্রশ্ন তিনি কিভাবে মরুভুমিতে থেকেও জানলেন যে, মাটির আনেক নিচে খনিজে পানি তরল অবস্থায় থাকেনা এবং যে কারনে উপরের আয়াতে তৃতীয়বারে পাথরের সাথে পানির কথা বলা হয়নি? তিনি কি এ বিষয়ের উপর গবেষণা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছিলেন? নাউযুবিল্লাহ কোরআন আল্লাহর বানী।

Author: moq@2020@

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *