বস্তুর নিন্মমুখী চুড়ান্ত বেগ (Terminal Velocity)
স্কাই ডাইভাররা মুক্তভাবে আকাশের অনেক উঁচুতে থাকা উড়ন্ত যান থেকে নিচের দিকে প্যারাসুট পরে লাফ দেয়। এসময় তাদের মাথা থাকে নিচের দিকে। এসময় বাতাসের ঘর্ষন তাদের বাঁধা দেয়। যতই নিচের দিকে যেতে থাকে বাতাসের ঘর্ষন এবং নিন্মমুখী বেগ বাড়তে থাকে। ধীরে ধীরে বাতাসের ঘর্ষন এতই বাড়তে থাকে যে স্কাই ডাইভাররা আর তা সহ্য করতে পারেনা। যতই নিন্মমুখী বেগ বৃদ্ধি পেতে থাকে ততই স্কাই ডাইভাররা বাতাসে নড়াচড়া করার জন্য শরীরে বেশি ভারসাম্য আনতে পারে। বস্তুর নিন্মমুখী চুড়ান্ত বেগের ৫০% অর্জিত হয় মাত্র ৩ সেকেন্ডে। বস্তুর নিন্মমুখী চুড়ান্ত বেগের ৯০% অর্জিত হয় মাত্র ৮ সেকেন্ডে। আর বস্তুর নিন্মমুখী চুড়ান্ত বেগের ৯৯% অর্জিত হয় মাত্র ১৫ সেকেন্ডে। স্কাই ডাইভাররা ভারী হয়েও যে বেগে নিচের দিকে নামতে পারে, কিছু কিছু পাখি আছে তার চেয়েও দ্রুত গতিতে নিচের দিকে নামতে পারে যদিও তারা স্কাই ডাইভারদের চেয়ে হালকা। পেরেগ্রিন-ফেলকন এবং গোল্ডেন ঈগল হল এমন দুটি পাখি। এদের নিন্মমুখী চুড়ান্ত বেগ যথাক্রমে ৩৮৯ কিলোমিটার/ঘণ্টায় এবং ৩৪০ কিলোমিটার/ঘণ্টায়। স্কাই ডাইভারদের মুক্তভাবে নিচের দিকে পরার চুড়ান্ত বেগ ১৯৫ কিলোমিটার/ঘণ্টায় বা ৫৪ মিটার/সেকেন্ড। এই দুইটি পাখি সহজেই স্কাই ডাইভারদের নিন্মমুখী চুড়ান্ত বেগকে অতিক্রম করতে পারে। আরও একটি জানার বিষয় হল এরা মাংসাশী পাখি। এরা উড়ন্ত অবস্থায় যেমন মুখ দিয়ে খাবার শিকার করতে পারে, তেমনি পারে তাদের নখ বিশিষ্ট দুটি পা দিয়ে শিকারকে ছোঁ মেরে ধরে দ্রুত পালিয়ে যেতে। এ বিষয়টি কোরআনে (২২:৩১) উল্লেখ করা হয়েছে।
٣١ حُنَفَاءَ لِلَّهِ غَيْرَ مُشْرِكِينَ بِهِ ۚ وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَكَأَنَّمَا خَرَّ مِنَ السَّمَاءِ فَتَخْطَفُهُ الطَّيْرُ أَوْ تَهْوِي بِهِ الرِّيحُ فِي مَكَانٍ سَحِيقٍ
অর্থঃ আল্লাহ তায়ালার প্রতি নিষ্ঠাবান হও, তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না; আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শরীক করে, তার অবস্থা হচ্ছে, সে যেন আসমান থেকে ছিটকে পড়ল, অতপর মাঝপথেই কোন পাখি যেন তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে গেল কিংবা আসমান থেকে যমীনে পরার আগেই বাতাস তাকে উড়িয়ে নিয়ে দূরের কোন অজ্ঞাতনামা স্থানে ফেলে দিল।
Being true to Allah, without associating anything with Him. Whoever associates anything with Allah it is as though he has fallen from the sky, and was snatched by the birds, or was taken down by the wind to a deep place.
পেরেগ্রিন-ফেলকন এবং গোল্ডেন ঈগল এই পাখিগুলো ছোঁ মেরে শিকার করতে পারে। এরা মাংসাশী পাখি। আবার এরা নিন্মমুখী চুড়ান্ত বেগের ক্ষেত্রেও স্কাই ডাইভারদের থেকে দ্রুত বেগে নিচের দিকে ছুটে আসতে পারে।
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন তাদের কাছে প্রশ্ন তিনি কিভাবে জানলেন কিছু পাখির বেগ স্কাই ডাইভারদের থেকেও বেশি হতে পারে এবং এরা নখ বিশিষ্ট দুটো পা দিয়ে উড়ন্ত অবস্থায়ও ছোঁ মেরে শিকার ধরতে পারে? তিনি কি এ বিষয়ের উপর গবেষণা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছিলেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।