গর্ভপাত (Miscarriage)
গর্ভপাত নানা কারণে হতে পারে। এটা অনেকেই জানেন যে শারীরিক ও মানসিক চাপের কারণে প্রস্রাব বা পায়খানার চাপ বৃদ্ধি পায়। ঠিক একই রকমভাবে মানসিক চাপের কারণেও গর্ভপাত হতে পারে। মানসিক চাপের কারণে মস্তিস্ক থেকে CRH নামক একধরণের হরমোন নিসৃত হয়। যে সমস্ত নারীর বাচ্চা পেটে বড় হবার আগেই ভুমিষ্ট হয় অথবা ওজনে কম হয়, তাদের রক্তে CRH নামক এই হরমোন উপস্থিত থাকে। গবেষণা থেকে জানা যায়, শারীরিক ও মানসিক চাপের কারণেই বেশিরভাগ গর্ভপাত হয়ে থাকে। আর CRH নামক হরমোন গর্ভবতী নারীর প্লাসেন্টা ও ইউটেরাসেও উৎপন্ন হয় যা প্রসবকালে সাহায্য করে।
আগে বিজ্ঞানীরা ভাবত CRH নামক হরমোন কেবল মানুষের মস্তিস্কেই উৎপন্ন হয় কিন্তু আধুনিক গবেষণায় জানা গেছে এই হরমোন শরীরের অন্যান্য অংশেও তৈরী হতে পারে। এই CRH নামক হরমোনগুলো যেসব কোষ এলার্জি তৈরী করে, সেগুলোকে আক্রমণ করে। আর এলার্জি তৈরির জন্য যে কোষগুলো দায়ী সেগুলো প্রসাবে বেশি পরিমানে থাকে। গর্ভবতী নারীর শরীরে যখন, CRH নামক হরমোন এবং এলার্জির জন্য দায়ী কোষগুলো মিলিত হয় তখন এমন পদার্থ তৈরী হয় যা গর্ভপাত ঘটাতে পারে। কোরআনে (২২:২) এই বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে,
٢ يَوْمَ تَرَوْنَهَا تَذْهَلُ كُلُّ مُرْضِعَةٍ عَمَّا أَرْضَعَتْ وَتَضَعُ كُلُّ ذَاتِ حَمْلٍ حَمْلَهَا وَتَرَى النَّاسَ سُكَارَىٰ وَمَا هُمْ بِسُكَارَىٰ وَلَٰكِنَّ عَذَابَ اللَّهِ شَدِيدٌ
অর্থঃ সেদিন তোমরা তা নিজেরা দেখতে পাবে, দেখবে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছে এমন প্রতিটি নারী ভয়াবহ আতংকে তার দুদ্ধপোষ্যকে ভুলে যাবে, প্রতিটি গর্ভবতী (জন্তু) তার গর্ভস্থিত বস্তুর বোঝা ফেলে দিবে, মানুষকে যখন তুমি দেখবে তখন তোমার মনে হবে তারা বুঝি কিছু নেশাগ্রস্থ মাতাল, কিন্তু তারা আসলে কেউই নেশাগ্রস্থ নয়; বরং (এটা হচ্ছে একধরণের আযাব,) আল্লাহর আযাব কিন্তু অত্যন্ত ভয়াবহ।
When you will see it [final Hour] every nursing mother will discard her infant, and every pregnant woman will miscarry, and you will see the people drunk, even though they are not drunk. but the punishment of Allah is severe.
উপরের আয়াতটি কেয়ামতের বর্ননা করছে, কেয়ামতের ভয়াবহতা যখন কোন মানুষ তার ইন্দ্রিয় দিয়ে অনুধাবন করবে, তখন প্রচণ্ড শারীরিক ও মানসিক চাপ সৃষ্টি হবে। আর সেই চাপে গর্ভপাত ঘটবে। চাপের সাথে যে গর্ভপাতের সম্পর্ক আছে তা আমরা এখন জানতে পারি আধুনিক বিজ্ঞানের মাধ্যমে। অথচ বিজ্ঞানে তা প্রায় ১৪৫০ বছর আগেই উল্লেখ করা হয়েছে।
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন তাদের কাছে প্রশ্ন তিনি কিভাবে জানলেন শারীরিক ও মানসিক চাপের সাথে গর্ভপাতের সম্পর্ক আছে? তিনি কি এ বিষয়ের উপর গবেষণা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছিলেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।