কক্ষপথ (Planetary Orbit)
পৃথিবীর মত, চন্দ্র, সুর্য এবং প্রতিটি নক্ষত্রের সুনির্দিষ্ট কক্ষপথ আছে। এ বিষয়ে কোরআনে (৩৬:৪০) উল্লেখ করা হয়েছে।
لَا الشَّمْسُ يَنْبَغِي لَهَا أَنْ تُدْرِكَ الْقَمَرَ وَلَا اللَّيْلُ سَابِقُ النَّهَارِ وَكُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ (40)
অর্থঃ সুর্যের এ ক্ষমতা নেই যে, সে চাঁদকে নাগালের কাছে পাবে, না রাত দিনকে ডিঙিয়ে আগে চলে যেতে পারবে, মুলত (চাদ সুরুজ সহ ) এরা প্রত্যেকেই শুন্যলোকে সাতার কেটে চলেছে।
It is not allowable for the sun to reach the moon, nor does the night overtake the day, but each, in an orbit, is swimming.
উপরের আয়াতে অবাক হবার মত আর একটি বিষয় আছে। বেশিরভাগ গ্রহ, চন্দ্র, সুর্য এবং নক্ষত্রের কক্ষপথ হল বৃত্তাকার বা উপবৃত্তাকার। আর এ বৃত্তাকার বা উপবৃত্তাকার বিষয়টিও পরোক্ষভাবে এই আয়াতের ‘কুললু ফি ফালাকি’ অংশে উল্লেখ করা হয়েছে।
উপরের অংশের সাতটি অক্ষরের মধ্যে প্রথমের সাথে সম্পর্ক সপ্তমের। দ্বিতীয়ের সাথে সম্পর্ক ষষ্ঠের। তৃতীয়ের সাথে সম্পর্ক পঞ্চমের এবং সবার মাঝখানে ‘ইয়া’। সৌরজগতের প্রতিটি গ্রহ যেমন সুর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে, ঠিক একইভাবে, উপরের অক্ষরগুলো যেন ‘ইয়া’ কে কেন্দ্র করে ঘুরছে। একই আয়াতে গ্রহ ও নক্ষত্রের কক্ষপথের কথা বলা হচ্ছে এবং অক্ষরগুলোর পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। আজ থেকে ১৪৫০ বছর আগে একথা কোন মানুষের পক্ষে বলা সম্ভব নয়।
অন্য একটি আয়াতেও (৩৯:০৫) এ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে,
خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِالْحَقِّ يُكَوِّرُ اللَّيْلَ عَلَى النَّهَارِ وَيُكَوِّرُ النَّهَارَ عَلَى اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِي لِأَجَلٍ مُسَمًّى أَلَا هُوَ الْعَزِيزُ الْغَفَّارُ (5)
অর্থঃ তিনি আসমান এবং জমিন সুপরিকল্পিতভাবেই সৃষ্টি করেছেন, তিনি রাতকে দিনের উপর লেপটে দেন এবং দিনকে রাতের উপর লেপটে দেন, তিনিই সুর্য ও চন্দ্রকে (একটি নিয়মের অধীন) করে রেখেছেন, এগুলো সবই একটি সুনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (নিজ নিজ কক্ষপথে) বিচরণ করতে থাকবে; মনে রেখ তিনি পরাক্রমশালী এবং পরম ক্ষমাশীল।
[Allah] Created the heavens and the Earth in truth. He overlaps the night over the day and overlaps the day over the night, and enslaved the sun and the moon, ALL MOVE to a prerecorded destiny. Is He not the Exalted, the Forgiver?
আরবিতে বচন তিন প্রকার। একবচন, দ্বিবচন এবং বহুবচন।কিন্তু উপরের আয়াতে ‘কুল্লুন ইয়াজরি’ দিয়ে বহুবচন ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থ্যাৎ, এখানে সুর্য ও চন্দ্র ছাড়াও আরও যে গ্রহ উপগ্রহ আছে তাদের সবাইকে বুঝানো হয়েছে। এখানে শুধুমাত্র সুর্য ও চন্দ্রকে বুঝানো হয়নি।
আরও একটি আয়াতে (৮৬:১১) এ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
وَالسَّمَاءِ ذَاتِ الرَّجْعِ (11)
And the sky that returns.
অর্থঃ বৃষ্টি বর্ষনকারী আকাশের শপথ।
উপরের আয়াতে ‘রাযই’ শব্দের অর্থ হল যা ঘুরে আবার আগের আবস্থানে আসে। এখানে নক্ষত্র এবং গ্রহ উপগ্রহের যে চলার পথ বা কক্ষপথ আছে তাকেই বোঝানো হয়েছে।
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন তাদের কাছে প্রশ্ন তিনি কিভাবে জানলেন গ্রহ বা নক্ষত্রের কক্ষপথ বৃত্তাকার বা উপবৃত্তাকার? যে আয়াতে কক্ষপথের কথা বলা হয়েছে ঠিক একই আয়াতে ‘কুললু ফি ফালাকি’ (চিত্র উপরে) বলা হয়েছে। তিনি কি এ বিষয়ের উপর গবেষণা করে এই কোরআন রচনা করেছিলেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।