অনেকগুলো নক্ষত্রের সৌরজগৎ (Multi-Star System)
সুর্য একটি নক্ষত্র। আমাদের পৃথিবী নামক গ্রহটি, শুধুমাত্র সুর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। কিন্তু এমন সৌরজগৎও আছে যার কেন্দ্রে একাধিক সুর্য বা নক্ষত্র থাকে। আবার এমন গ্রহও আছে যা একাধিক সুর্যের মত নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করছে বা ঘুরছে। আমরা যদি ঐ সমস্ত গ্রহে যেতে পারি তাহলে আমাদের একাদিক ছায়া পরবে। যে কয়টি সুর্য, সে কয়টি ছায়া হবে। যারা রাতের বেলায় স্টেডিয়ামে খেলা দেখেছেন তারা দেখবেন প্রতিটি খেলোয়াড়ের একাধিক ছায়া। স্টেডিয়ামে যে কয়টি ফ্লাডলাইট থাকে সে কয়টি ছায়া তৈরী হয়।
পৃথিবী যেমন একটি সুর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে, এমন উদাহরন মহাকাশে প্রচুর আছে। দুটি সুর্যকে কেন্দ্র করে একটি গ্রহ ঘুরছে, এমন উদাহরণও আছে। তবে এমন উদাহরন সংখ্যায় কম। তবে সম্প্রতি মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র নাসা আবিষ্কার করেছে যে, মহাকাশে তিনটি সুর্যকে কেন্দ্র করে একটি গ্রহ ঘুরছে এমন উদাহরণও আছে। মহানবীর যুগে কোন মহাকাশ পরীক্ষা করার যন্ত্র ছিলনা। কিন্তু কোরআনে (৭৭:৩০-৩১) জাহান্নামের বর্ননা দিতে গিয়ে এ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে,
٣٠ انْطَلِقُوا إِلَىٰ ظِلٍّ ذِي ثَلَاثِ شُعَبٍ٣١ لَا ظَلِيلٍ وَلَا يُغْنِي مِنَ اللَّهَبِ
অর্থঃ চল সেই ধুম্রপুঞ্জের ছায়ার দিকে, যার রয়েছে তিনটি (ভয়ংকর) শাখা প্রশাখা।এ ছায়া কিন্তু সুনিবিড় কিছু নয়, এটা (তাকে) আগুনের লেলিহান শিখা থেকেও বাঁচাতে পারবেনা;
Proceed to a shadow of three branches. No shade, and no protection from the flames.
উপরোক্ত আয়াতে জাহান্নাম কেমন হবে সে সম্পর্কে বলা হয়েছে। আল্লাহই তা ভাল জানেন। তবে উপরোক্ত আয়াতটি আমাদের তিনটি সুর্য বিশিষ্ট সৌরজগতের ধারণা দেয়। অন্য একটি আয়তেও (৭০:৪০) এ বিষয়ে কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে।
٤٠ فَلَا أُقْسِمُ بِرَبِّ الْمَشَارِقِ وَالْمَغَارِبِ إِنَّا لَقَادِرُونَ
অর্থঃ আমি উদয়াচল ও অস্তাচলসমূহের মালিকের শপথ করছি, অবশ্যই আমি (বিদ্রোহীদের ধ্বংস সাধনে) সক্ষম,
I swear by the Lord of the sunrises and the sunsets, that We (Allah is one and only) are able…
‘মাশরেক’ অর্থ একটি সুর্যোদয়। ‘মাশরেকাইন’ অর্থ দুইটি সুর্যোদয়। আর ‘মাশারেক’ অর্থ দুইয়ের অধিক সুর্যোদয়। উপরের আয়াতে ‘মাশারেক’ ব্যবহার করা হয়েছে যার অর্থ দুইয়ের অধিক সুর্যোদয়। আধুনিক বিজ্ঞানের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, দুইটি বা তিনটি বা তারও অধিক সুর্য বিশিষ্ট সৌরজগৎও মহাকাশে আছে। যেখানে সুর্যসংখ্যা অনুযায়ী সুর্যোদয় ও সুর্যাস্ত হয়। এতেই প্রমাণিত হয় যে, কোরআন একাধিক সুর্য বিশিষ্ট সৌরজগতের ধারণা দেয়, যা বিজ্ঞান সম্প্রতি আবিষ্কার করেছে।
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন তাদের কাছে প্রশ্ন তিনি কিভাবে কোরআনে ‘মাশারেক’ নামক বহুবচন শব্দটি ব্যবহার করলেন যদিও পৃথিবীতে দিনে মাত্র একবারই সুর্যোদয় ও সুর্যাস্ত হয়? আধুনিক বিজ্ঞান থেকে আমরা জানতে পারি, একাধিক সুর্য আছে এমন সৌরজগতও মহাকাশে আছে। তিনি কি এ বিষয়ের উপর গবেষণা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছিলেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।