অদৃশ্য বস্তু (Dark Matter)
মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু একটি অপরটিকে তার নিজের দিকে আকর্ষন করছে। বস্তুর ভর যত বেশি, আকর্ষন করার শক্তিও তত বেশি। বিগ ব্যঙ্গের পর থেকেই এই মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে। নভোচারীরা গবেষণা করে দেখেছেন যে, মহাকাশে একটি বস্তু অন্যটিকে আকর্ষন করে। এই শক্তিকে বলা হয় মহাকর্ষ বল। এই বল একটি বস্তুকে অন্যটির দিকে আকর্ষন করে। আবার, মহাকাশে আর এক ধরণের অদৃশ্য শক্তি আছে, যা একটি বস্তুকে অন্যটির থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। আর এই শক্তিকেই বলা হয় অদৃশ্য শক্তি বা ডার্ক মেটার। এই অদৃশ্য শক্তি বা ডার্ক মেটার হল মহাকর্ষ শক্তির অনেকটা বিপরীত। মহাকর্ষ শক্তি কাছে টানে আর ডার্ক মেটার দূরে ঠেলে দেয়। দুরত্ব বাড়লে মহাকর্ষ শক্তি কমে কিন্তু দুরত্ব বাড়লে ডার্ক মেটার নামক অদৃশ্য শক্তি বাড়ে। ডার্ক মেটার নামক এই শক্তি, গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ গুলোর একটিকে আর একটি থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। দুরত্ব যত বেশি হয়, গ্যালাক্সি বা ছায়াপথগুলো তত দ্রুত একটি অপরটি থেকে দূরে সরে যায়। ডার্ক মেটার কি তা বিজ্ঞানীরা আজও আবিষ্কার করতে পারেনি, তবে তারা এটুকু বুঝতে পেরেছেন যে, এই মহাবিশ্বের ছায়াপথ গুলো ডার্ক মেটার নামক এক অদৃশ্য শক্তির কারণে একটি অপরটি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। কোরআনে (১৩:২)এ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
٢ اللَّهُ الَّذِي رَفَعَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا ۖ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ ۖ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ ۖ كُلٌّ يَجْرِي لِأَجَلٍ مُسَمًّى ۚ يُدَبِّرُ الْأَمْرَ يُفَصِّلُ الْآيَاتِ لَعَلَّكُمْ بِلِقَاءِ رَبِّكُمْ تُوقِنُونَ
অর্থঃ (তিনিই আল্লাহ তায়ালা) যিনি আসমান সমুহকে কোন স্তম্ভ ছাড়াই উঁচু করে রেখেছেন, অতপর তিনি আরশে সমাসীন হলেন, এবং তিনি সুরুজ ও চাঁদকে (একটি নিয়মের) অধীন করে রেখেছেন; (গ্রহ তারকার) সব কিছুই একটি সুনির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত আবর্তন করতে থাকবে; তিনিই সব কাজের (পরিকল্পনা ও) নিয়ন্ত্রণ করেন, তিনি (তার কুদরতের) সব নিদর্শন (তোমাদের কাছে) খুলে খুলে বর্ননা করেন, যাতে করে তোমরা (কেয়ামতের দিন) তোমাদের মালিকের সাথে দেখা করার বিষয়টি নিশ্চিতভাবে মেনে নিতে পার।
Allah is the one who raised the heavens without pillars that you can see, and then settled on the Throne. And He regulated the sun and the moon, each running for a specified period. He manages all affairs, and He explains the signs, that you may be certain of the meeting with your Lord.
উপরের আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহ কোন স্তম্ভ ছাড়াই আসমানকে উঁচু করে রেখেছেন। মধ্যাকর্ষনের কাজ ও স্তম্ভের কাজ একটি আরেকটির উল্টো। মধ্যাকর্ষন বল বস্তুকে নিচের দিকে টেনে আনে আর অন্যদিকে, স্তম্ভ ছাদকে উপরে ধরে থাকে। ঠিক একই রকমভাবে, মহাকর্ষ বল পরস্পরকে আকর্ষন করে আর অন্যদিকে ডার্ক মেটার ছায়াপথগুলোকে পরস্পর থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। যদি এই মহাবিশ্বে ডার্ক মেটার না থাকত, তাহলে মহাকর্ষ বলের কারণে মহাবিশ্বের সকল বস্তু একটি আরেকটিকে আকর্ষন করার ফলে সকল ভর এক জায়গায় চলে আসত। সুতরাং, বলা যায়, ডার্ক মেটারের কাজ অনেকটা উপরিল্লিখিত স্তম্ভের মতই যা ছায়াপথগুলোর একটিকে অন্যটি থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। সম্প্রতি আমরা জানতে পেরেছি, ডার্ক মেটারের বা ডার্ক এনার্জি হল মহাকর্ষ বলের অনেকটা উল্টো। এই শক্তি হল অদৃশ্য এবং এই শক্তির ফলেই মহাবিশ্ব ভারসাম্যপুর্ন অবস্থায় আছে। অন্যথায়, মহাকর্ষ বলের আকর্ষনের ফলে একটি আরেকটির গায়ে লেগে সংঘর্ষ হত এবং সব ধ্বংস হয়ে যেত। আল্লাহ ছাড়া এই মহাবিশ্ব ধ্বংস হয়ে যেত। এই বিষয়ে কোরআনে (৩৫:৪১) উল্লেখ করা হয়েছে।
٤١ إِنَّ اللَّهَ يُمْسِكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ أَنْ تَزُولَا ۚ وَلَئِنْ زَالَتَا إِنْ أَمْسَكَهُمَا مِنْ أَحَدٍ مِنْ بَعْدِهِ ۚ إِنَّهُ كَانَ حَلِيمًا غَفُورًا
অর্থঃ (বস্তুত) আল্লাহ তায়ালাই আসমানসমূহ ও জমিনকে স্থির করে (ধরে) রেখেছেন, যাতে করে ওরা (স্বীয় কক্ষপথ থেকে) বিচ্যুত না হতে পারে, যদি (কখনও) ওরা কক্ষচ্যুত হয়েই পরে তাহলে (তুমিই বলো), আল্লাহ তায়ালার পর এমন কে আছে যে এদের উভয়কে (পুনঃ) স্থির করতে পারবে, অবশ্যই তিনি মহা সহলশীল, ক্ষমাপরায়ন।
Allah holds the heavens and the earth, lest they vanish. And they would have vanished if someone else tried to hold them after Him. He is Most Clement, Most Forgiving.
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন তাদের কাছে প্রশ্ন তিনি কিভাবে জানলেন এই মহাবিশ্বে ডার্ক এনার্জি আছে এবং এই ডার্ক এনার্জি অনেকটা স্তম্ভের মত কাজ করে? তিনি কিএ বিষয়েরউপর গবেষণা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছিলেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।