ভ্রুণ থেকে মানব শিশুর ভূমিষ্ট হওয়া পর্যিন্ত নিয়ন্ত্রিত বিকাশ (Fatal development)

ভ্রুণ থেকে মানব শিশুর ভূমিষ্ট হওয়া পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত বিকাশ (Fatal development)

ভ্রুণ থেকে মানব শিশুর ভূমিষ্ট হওয়া পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত বিকাশ (Fatal development):

পুরুষ ও নারীর মিলনের ফলে পুরুষের শুক্রানু নারীর জরায়ুতে প্রবেশ করে। তারপর ভ্রুণ সৃষ্টি হয়। সেই ভ্রুণ আবার আনেক গুলো ধাপ পেরিয়ে তারপর পুর্ণাঙ্গ শিশু হয়ে মায়ের গর্ভ থেকে ভুমিষ্ট হয়ে পৃথিবীতে আসে। কোরআনে এইধাপগুলোর কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে। শুধু তাই নয়, বাস্তবে ঐ ধাপ গুলো যে ক্রমানুযায়ী (সিরিয়ালে) ঘটে, কোরআনেও ঠিক ঐ সঠিক ক্রমেই (সিরিয়ালেই) ঘটনাগুলো বর্ণনা করা আছে। ধাপগুলো রাসুল (সঃ) এর যুগে খালি চোখে দেখা যেতনা। এখন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা ঐ ধাপগুলো নির্নয় করতে সক্ষম হয়েছে। যদি কোন মানুষ এই আয়াত তৈরী করত, তাহলে ধাপগুলো এলোমেলো থাকত, পরের ঘটনা আগে অথবা আগের ঘটনা পরে উল্লেখ করা হত। হয়ত বলা থাকত মানব শিশুর মুখ আগে তৈরী হয় আর হাড় তৈরী হয় পরে। কিন্তু না। কোরআনে একদম সঠিক ক্রম (সিরিয়াল) অনুযায়ী ভ্রুণ বিকাশের পর্যায়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে। একটু পড়লেই সঠিক ক্রম(সিরিয়াল) জানতে পারবেন।

এ সংক্রান্ত একটি আয়াত কোরআনে (২২:০৫) আছে,

٥  يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنْ كُنْتُمْ فِي رَيْبٍ مِنَ الْبَعْثِ فَإِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ مِنْ مُضْغَةٍ مُخَلَّقَةٍ وَغَيْرِ مُخَلَّقَةٍ لِنُبَيِّنَ لَكُمْ ۚ وَنُقِرُّ فِي الْأَرْحَامِ مَا نَشَاءُ إِلَىٰ أَجَلٍ مُسَمًّى ثُمَّ نُخْرِجُكُمْ طِفْلًا ثُمَّ لِتَبْلُغُوا أَشُدَّكُمْ ۖ وَمِنْكُمْ مَنْ يُتَوَفَّىٰ وَمِنْكُمْ مَنْ يُرَدُّ إِلَىٰ أَرْذَلِ الْعُمُرِ لِكَيْلَا يَعْلَمَ مِنْ بَعْدِ عِلْمٍ شَيْئًا ۚ وَتَرَى الْأَرْضَ هَامِدَةً فَإِذَا أَنْزَلْنَا عَلَيْهَا الْمَاءَ اهْتَزَّتْ وَرَبَتْ وَأَنْبَتَتْ مِنْ كُلِّ زَوْجٍ بَهِيجٍ

অর্থঃহে মানুষ, পুনরুত্থান (দিবস) সম্পর্কে যদি তোমাদের মনে কোন সন্দেহ থাকে তাহলে (তোমরা আমার সৃষ্টি প্রক্রিয়া ভেবে দেখ) আমি তোমাদের প্রথমত মাটি থেকে, অতপর শুক্র থেকে, অতপর রক্ত পিণ্ড থেকে, তারপর মাংস পিণ্ড থেকে পয়দা করেছি, যা আকৃতি বিশিষ্ট (হয়ে সন্তানে পরিণত হয়েছে) কিংবা আকৃতি বিশিষ্ট না হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে– যেন আমি তোমাদের কাছে (আমার সৃষ্টি কৌশল) প্রকাশ করে দিতে পারি…

O people! If you are in doubt about the Resurrection-We (Allah is one and only)created you from dust, then from a small drop, then from a clinging clot, then from a lump of flesh, featureless and with features. In order to clarify things for you.

এই আয়াতেও ভ্রুণ বিকাশের ধাপগুলো সঠিক ক্রমেই (সিরিয়ালে) উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থ্যাৎ প্রথমে শুক্র, তারপর রক্ত পিণ্ড, তারপর মাংস পিণ্ড, তারপর আকৃতি বিশিষ্ট হয়ে সন্তানে পরিণত হয় অথবা আকৃতি না পেয়ে নষ্ট হয়ে যায়।

বাস্তবেও তাই হয়। বিকাশের সময় প্রথম দিকে ভ্রুণের আকার আকৃতি বোঝা যায়না। অর্থ্যাৎ কোনটি হাত, কোনটি পা, কোনটি চোখ, নাক কিংবা মুখ আলাদা করা যায় না। সময়ের সাথে সাথে এগুলো আলাদা করা যায়। উপরের আয়াতে ‘মুখাল্লাকাতিন’ অর্থ আকৃতি প্রাপ্ত এবং ‘ওয়াগাইরি মুখাল্লাকাতিন’ অর্থ আকৃতিহীন।

কোরআনে (২৩:১৪) আরও আছে,

অর্থঃ এরপর শুক্রবিন্দুকে আমি এক ফোটা জমাট রক্তে পরিণত করি, অতপর এ জমাট রক্তকে মাংসপিণ্ডে পরিণত করি, (কিছুদিন পর) এই পিণ্ডকে অস্থিপাজরে পরিণত করি, তারপর (একসময়) এ অস্থি পাজরকে আমি গোশতের পোশাক পরিয়ে দেই, অতপর (বানানোর প্রক্রিয়া শেষ করে) আমি তাকে (সম্পুর্ণ) ভিন্ন এক সৃষ্টি (তথা পুর্ণাংগ মানুষ) রুপে পয়দা করি; আল্লাহ কত উত্তম সৃষ্টিকর্তা (কত নিপুন তাঁর সৃষ্টি);

Then We (Allah is one and only) developed the semen into a leech. Then We (Allah is one and only) developed the leech into a lump. Then We(Allah is one and only)  developed the lump into bonesThen We(Allah is one and only) clothed the bones with flesh. Then We(Allah is one and only) produced it into another feature. Most blessed is Allah, the Best of Creators.

ভ্রুন বিকাশের পর্যায়ে প্রথমে হাড় তৈরি হয়, তারপর সেই হাড়কে গোশত দিয়ে মোড়ানো হয়। এই ঘটনার পরই মুখমণ্ডলের আকার আকৃতি তৈরী হয়। তখনই কেবল মানব শিশুকে পুর্নাংগ এবং ভিন্ন ভিন্ন আকৃতিতে চেনা যায়। তার আগে আলাদা আলাদা করে চেনা যায়না। মানব শিশুর কঙ্কালের হাড়গুলোর মধ্যে প্রথমে তৈরী হয় মেরুদণ্ড। তবে সেটি তখন তৈরী হয় নরম হাড় বা তরুনাস্থি দিয়ে। তরুনাস্থি গুলোর মধ্যে চোয়ালের হাড়ই প্রথম শক্ত হয়।

বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, প্রথমে নরম হাড় বা তরুনাস্থি তৈরী হয়। তরুনাস্থি গুলোর মধ্যে সবার আগে চোয়ালের হাড় তৈরী হয়। আনুমানিক ৪১ তম দিনে চোয়ালের হাড় তৈরী হয়। আনুমানিক ৪৫ তম দিন থেকে হাড়ের উপর গোশত সংযুক্ত হতে শুরু করে। অতপর মুখমণ্ডলের আকার আকৃতি গঠন আনুমানিক ৬০ তম দিন থেকে শুরু হয়ে ৯০ তম দিনের মধ্যে শেষ হয়। বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত ধাপগুলো কোরআনে বর্নিত ধাপগুলোর সাথে হুবহু মিলে যায়।

যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি একজন চিকিৎসক ছিলেন যিনি ঐ আমলে ভ্রুনের উপর গবেষনা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছেন এবং ভ্রুণ বিকাশের ধাপগুলো একদম সঠিক ক্রমে (সিরিয়ালে) এই আয়াতে উল্লেখ করেছেন? নাউযুবিল্লাহ কোরআন আল্লাহর বানী।

http://www.miracles-of-quran.com/fetal_development.htm

Author: moq@2020@

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *