কানের পর্দা (Ear drum):
আমাদের কানের ভিতর এক ধরণের পর্দা আছে যেখানে বাতাস থেকে যাওয়া তরঙ্গ একধরনের কম্পন সৃষ্টি করে। ফলে আমরা শুনতে পাই। ঐ পর্দাটি কানের বাইরের অংশ (Ear Canal) থেকে ভেতরের অংশকে (Middle ear) আলাদা করে রাখে। এই পর্দাটি ফেটে গেলে আমরা আর শুনতে পারিনা।
অনেক সময় জোরে শব্দ বা আঘাতের কারণে কানের ঐ পর্দায় গর্ত হয়, চিড় ধরে বা ফেটে যায়। ফলে কানের ভিতরে ক্ষত সৃষ্টি হয়ে রোগ সংক্রমন হয়। সাধারণত কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এই গর্ত বা ফাটল প্রাকৃতিক ভাবেই ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু মাঝে মাঝে চিকিৎসকের মাধ্যমে অস্ত্রপাচার বা অপারেশন করতে হয়।
কানের পর্দা ফেটে গেলে শব্দ শোনা যায়না। রাসুল (সঃ) এর যুগে এই ফাটল খালি চোখে দেখার কোন ব্যবস্থা ছিলনা। এখন আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে আমরা এই গর্ত, চিড় বা ফাটল দেখতে পারি। অথচ কোরআনে (০৬:২৫) প্রায় ১৪৫০ বছর আগেই এই গর্ত, চিড় বা ফাটলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যার কারণে আমরা শব্দ শুনতে পাইনা।
٢٥ وَمِنْهُمْ مَنْ يَسْتَمِعُ إِلَيْكَ ۖ وَجَعَلْنَا عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ أَكِنَّةً أَنْ يَفْقَهُوهُ وَفِي آذَانِهِمْ وَقْرًا ۚ وَإِنْ يَرَوْا كُلَّ آيَةٍ لَا يُؤْمِنُوا بِهَا ۚ حَتَّىٰ إِذَا جَاءُوكَ يُجَادِلُونَكَ يَقُولُ الَّذِينَ كَفَرُوا إِنْ هَٰذَا إِلَّا أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ
অর্থঃ তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোকও আছে যে (বাহ্যিক দৃষ্টিতে মনে হয়) তোমার কথা সে কান দিয়ে শুনছে, কিন্তু (আসলে) আমি তাদের মনের উপর পর্দা ঢেলে দিয়েছি ( ছিদ্র বা ফাটল ধরিয়েছি বা বধির করে দিয়েছি), যার কারণে তারা কিছুই উপলব্দি করতে পারেনা, আমি তাদের কানেও ছিপি এটে দিয়েছি; (মুলত) তারা যদি (আল্লাহর) সব নিদর্শন দেখেও নেয়, তবুও তারা তাঁর প্রতি ঈমান আনবেনা…
Among them are those who listen to you; but We(Allah is one and only) place covers over their hearts, to prevent them from understanding it, and tear in their ears. Even if they see every sign, they will not believe in it. Until, when they come to you, to argue with you, those who disbelieve will say, “These are nothing but myths of the ancients.”
উপরের আয়াতে ‘ওয়াকরান’ শব্দের অর্থ ছিদ্র বা ফাটল বা বধির। ঐ যুগে কিভাবে আধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়াই রাসুল (সঃ) জানলেন যে, ছিদ্র বা ফাটলের কারণেই রোগী কানে শুনতে পায়না। এখানে ছিদ্র বা ফাটল ধরা হল রোগের কারণ আর শুনতে না পাওয়া হল রোগের ফলাফল।
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি একজন চিকিৎসক ছিলেন ঐ আমলে কানের ছিদ্র বা ফাটল সম্পর্কে গবেষনা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছেন এবং যথোপযুক্ত শব্দ ‘ওয়াকরান’ ব্যবহার করেছেন অর্থ্যাৎ ছিদ্র বা ফাটল ধরা হল রোগের কারণ আর শুনতে না পাওয়া হল রোগের ফলাফল? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।