ডিজিটাল বই (Digital Book):
আগেকার দিনে মানুষ পশুর চামড়া বা প্রাচীন যুগের কাগজে লিখত। কিন্তু এখনকার যুগে আমরা কাগজের বইকে ডিজিটাল বইয়ে রূপান্তরিত করতে পারি। সাধারণত আমরা যে পদ্ধতিতে গণনা করি তার নাম দশমিক পদ্ধতি কিন্তু কম্পিউটার যে পদ্ধতিতে গণনা করে তার নাম দ্বিমিক পদ্ধতি। দ্বিমিক পদ্ধতি দিয়ে শুধু দুইটি অঙ্ক গণনা করা হয়। ০ এবং ১। যখন আমরা কাগজের বইকে ডিজিটাল করে ফেলি, তখন সেটি পড়ার জন্য যন্ত্র প্রয়োজন হয়। যেমন- কম্পিউটার, ল্যাপটপ, এনড্রয়েড মোবাইল, ট্যাবলেট বা নোটবুক ইত্যাদি।
সম্প্রতি আমরা এইসব যন্ত্রাদি আবিষ্কার করেছি। কিন্তু এগুলো আবিষ্কারের অনেক আগেই এ সংক্রান্ত ধারণা কোরআনে দেয়া হয়েছে প্রায় ১৪৫০ বছর আগে। পরকালে গিয়ে বিশ্বাসীরা তাদের পৃথিবীতে কাটিয়ে আসা অতীত জীবন দেখতে পাবে। আর এই অতীতকে ধরে রাখার চাহিদা থেকেই আবিষ্কার হয়েছে ক্যামেরা এবং ভিডিও ক্যামেরা। কোরআনে (৮৩:১৯-২১) আছে,
١٩ وَمَا أَدْرَاكَ مَا عِلِّيُّونَ٢٠ كِتَابٌ مَرْقُومٌ٢١ يَشْهَدُهُ الْمُقَرَّبُونَ
অর্থঃতুমি কি জানতে এ ‘ইল্লিয়্যিন’ (এ রক্ষিত আমলনামা) কি? এ হচ্ছে একটি সীল করা বই (ডিজিটাল বইয়ের মত), আল্লাহর নিকটতম ফেরেশতারাই তা তদারক করেন;
And how can you know about Elliyyoon? A digitized book; Watched by the close ones.
আরবিতে ‘মারকুম’ দিয়ে‘ ডিজিটাল করা হয়েছে’ এমন জিনিষকে বুঝায়। কোরআনে অধ্যায় (সুরা) ও আয়াত (বাক্য) সংখ্যা সুনির্দিষ্ট। কাগজের বই থকে আমরা শুধু পড়তে পারি অথবা ছবি দেখতে পারি কিন্তু ছবির নড়াচড়া দেখতে পারিনা।
কিন্তু ডিজিটাল ডিভাইসে আমরা পড়ার সাথে সাথে ছবি এবং ভিডিওর মাধ্যমে বস্তুর নড়াচড়াও দেখতে পারি। উপরের আয়াতে ‘আশহাদুহু’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে যা দিয়ে দেখার কথা বলা হয়েছে। পড়ার কথা নয়।
পড়ার কথা বলা হলে ‘ইয়াকরাউহু’ লিখা হত। আর এই দেখার চাহিদা থেকেই ডিজিটাল যন্ত্র তৈরী হয়েছে। ইহকালে অতীত দেখতে ডিজিটাল যন্ত্র লাগে। কিন্তু পরকালে ‘ইল্লিয়্যিন’ এর মাধ্যমে আমরা অতীত জীবনের ইতিহাস ভিডিওর মত দেখতে পাব ইনশাআল্লাহ এবং তখন কোন রকম যন্ত্রের প্রয়োজন হবেনা। যেহেতু উপরের আয়াতে পড়ার কথা বলা হয়নি সেহেতু পরকালের আমলনামার বইটি কাগজের হবেনা। বরং, বলা হয়েছে আমারা আমাদের অতীত জীবনের ঘটনা গুলো দেখতে পারব অর্থ্যাৎ নড়াচড়া সহ দেখতে পাব সেহেতু পরকালের আমলনামার বইটি হবে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, এনড্রয়েড মোবাইল, ট্যাবলেট বা নোটবুকের মত যন্ত্রের মত বা তার চাইতেও উন্নত প্রযুক্তি, যা হয়ত যন্ত্র ছাড়াই চলবে।
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি বর্তমানে এসে ডিজিটাল ডিভাইস নিয়ে গবেষনা করে, তারপর অতীতে ফিরে গিয়ে এই কোরআন রচনা করেছেন এবং উপরের আয়াতে ‘আশহাদুহু’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।