
প্রেরণা দেয়া এবং প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা (Motivation and Commitment)
ইসলামে প্রেরণা দেয়া এবং প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা দুটোই খুবই গুরুত্বপুর্ণ বিষয়। কোন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপকের বা ম্যনেজারের অনেকগুলো গুণের মধ্যে প্রধান দুইটি গুণ হল প্রেরণা দেয়ার সক্ষমতা এবং প্রতিশ্রুতি পুর্ণ করার অভ্যাস থাকা। প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা কাজ করতে করতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। আর ঐ সময় প্রয়োজন হয় সঠিক প্রেরণার যা মানসিক শক্তিকে জাগিয়ে তুলে। ফলে নতুন করে আবার কাজ শুরু হয়। আবার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করাও খুবই গুরুত্বপুর্ণ। নীতিহীন ব্যবস্থাপক বা ম্যনেজাররা অনেক সময় মিথ্যা আশ্বাস দেখিয়ে কাজ করিয়ে নেয় এবং কাজ আদায় হয়ে গেলে কেটে পরে এবং ভুলে যায় আশ্বাসের কথা। অনুন্নত দেশগুলিতেও অনেক সময় নির্বাচনে জয়ী হবার জন্যে অশিক্ষিত জনগণকে মিথ্যা আশ্বাস দেখিয়ে ক্ষমতায় আসে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। কিন্তু যখনই নির্বাচনে জয়ী হয়ে যায়, তখনই জনগণকে দেয়া আশ্বাসের কথা তারা ভুলে যায় এবং শুধু ব্যক্তি স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। কোরআনে প্রেরণা দেয়া এবং প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার বিষয়ে (০৩:১৫৯) আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।
فَبِمَا رَحْمَةٍ مِنَ اللَّهِ لِنْتَ لَهُمْ وَلَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِيظَ الْقَلْبِ لَانْفَضُّوا مِنْ حَوْلِكَ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِينَ (159)
অর্থঃ এটা আল্লাহর এক অসীম দয়া যে, তুমি এদের সাথে ছিলে কোমল প্রৃকৃতির মানুষ, এর বিপরীতে যদি তুমি নিষ্ঠুর ও পাষাণ হৃদয়ের মানুষ হতে, তাহলে এসব লোক তোমাদের আশপাশ থেকে সরে যেত, অতএব তুমি এদের অপরাধসমুহ মাফ করে দাও, এদের জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং কাজকর্মের ব্যাপারে এদের সাথে পরামর্শ কর…
If you had been stern and fierce of heart they (the companions and followers) would have disappeared from around you. So pardon them and ask forgiveness for them and consult them in the conduct of affairs
উপরের আয়াতে কোমল প্রকৃতির মানুষ হতে বলা হয়েছে। কোমল প্রকৃতির মানুষ না হলে মানুষের সাথে মেশা যায় না। আর মানুষের সাথে না মিশতে পারলে সমস্যা নির্নয় করা যায়না। আর সথিকভাবে সমস্যা ধরতে না পারলে বোঝা যায়না কি বিষয়ে প্রেরণার প্রয়োজন। আর কঠিন হৃদয়ের মানুষের প্রেরণার সফলতা আসেনা কারণ তার কথা সাধারণ মানুষ শুনলেও তা মন থেকে গ্রহণ করে না। অন্যদিকে, কোমল প্রকৃতির মানুষের ভিতর থেকে বের হয়ে আসা প্রেরণায় ব্যক্তি, দল, সমাজ, দেশ সহ এই সম্পুর্ণ পৃথিবীর মানুষ উপকৃত ও অনুপ্রাণিত হয় এবং সঠিক দিক নির্দেশনা পায়। আবার পরামর্শ করে কাজ করলেই সফল হওয়া যায় এবং অধীনস্তদের দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা যায়।
যারা বলে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কোরআন রচনা করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রেরণ দেয়া এবং প্রতিশ্রুতি রক্ষার উপকারিতার উপর গবেষনা করে তারপর এই কোরআন রচনা করেছেন? নাউযুবিল্লাহ। কোরআন আল্লাহর বানী।